সালমান শাহ হত্যা মামলায় প্রথমবার স্পষ্ট কথা বললেন শাবনূর
বিনোদন ডেস্কঃ
প্রকাশিত: ০৯:১০ পিএম, সোমবার, ২৭ অক্টোবর ২০২৫ আপডেট: ০৯:১০ পিএম, সোমবার, ২৭ অক্টোবর ২০২৫
ঢালিউডের ক্ষণজন্মা নায়ক সালমান শাহ। মাত্র ৪ বছরের অভিনয়জীবনে ২৭টি সিনেমায় অভিনয় করেছেন। ১৯৯৬ সালের ৫ সেপ্টেম্বর রাতেও সিনেমার কাজ নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন সালমান। পরদিন সকালে ছড়িয়ে পড়ে তাঁর মৃত্যু সংবাদ। ২৯ বছর আগে সালমান শাহর অকালমৃত্যুর খবর দেশের বিনোদন অঙ্গনে এক অমোচনীয় ক্ষতি হিসেবে থেকে গেছে। এই ঘটনায় আদালতের নির্দেশে ২১ অক্টোবর রমনা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। বিষয়টি জানতে পেরেছেন শাবনূর, মামলার সঙ্গে তাঁর নাম জড়ানোকে ‘ভিত্তিহীন গুজব’ বলছেন।
সালমান শাহ ঢাকাই চলচ্চিত্রে এক অপ্রতিদ্বন্দ্বী নায়কের নাম। ১৯৯৩ সালে ‘কেয়ামত থেকে কেয়ামত’ ছবি দিয়ে তাঁর অভিষেক। প্রথম সিনেমার নায়িকা মৌসুমী হলেও সালমানের অধিকাংশ ছবিরই নায়িকা ছিলেন শাবনূর। বর্তমানে সপরিবার অস্ট্রেলিয়ায় অবস্থান করছেন তিনি। শাবনূরের সঙ্গে সালমানের প্রথম দেখাটা হয় এফডিসিতে।
সেদিনের অভিজ্ঞতা নিয়ে শাবনূর বলেছিলেন, ‘সালমানকে প্রথম দেখি এফডিসিতে। মৌসুমী আপুর সঙ্গে শুটিং করছিল। আসা-যাওয়ার মধ্যেও দেখা হতো। তবে খুব একটা কথা হতো না। তখন শুনেছি, ফিল্মে সালমান শাহ নামে নতুন একজন হিরো এসেছে। আনুষ্ঠানিক পরিচয় “তুমি আমার” ছবিতে অভিনয় করার সময়। তখন কাজের কারণে বন্ধুত্ব হয়। আমাদের প্রথম ছবি “তুমি আমার” মুক্তি পাওয়ার পর সুপারহিট হয়।’
২৯ বছর আগে সালমান শাহ মারা গেলেও তাঁর মৃত্যু নিয়ে থেকে যায় রহস্য। পরিবার থেকে বারবার এটিকে হত্যাকাণ্ড বলা হলেও কয়েক বছর আগে আত্মহত্যা বলে রায় দেওয়া হয়। সম্প্রতি চিত্রনায়ক সালমান শাহর মৃত্যুর ঘটনায় হত্যা মামলা করার আদেশ দিয়েছেন আদালত। মামলাটি তদন্তের জন্য রমনা থানাকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ঢাকার ষষ্ঠ অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ জান্নাতুল ফেরদৌস ইবনে হক এ আদেশ দেন।
সালমান শাহর মৃত্যুর পর শাবনূরকেও অনেক ধরনের প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হয়। এ নিয়ে তিনি সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলে নিজের অবস্থান বরাবরই পরিষ্কার করেছেন। আজ সোমবার ফেসবুক পোস্টে তিনি লিখেছেন, ‘আমার সম্পর্কে ভিত্তিহীন গুজব ও অপপ্রচারের তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। সবাইকে অনুরোধ করছি, সত্যতা বিবর্জিত ও ভ্রান্ত তথ্য প্রচার থেকে বিরত থাকুন।’
চলচ্চিত্র ক্যারিয়ারের প্রসঙ্গেও শাবনূর জানিয়েছেন, সালমান শাহ ছিলেন তাঁর অত্যন্ত প্রিয় সহ–অভিনেতা। একসঙ্গে প্রায় ১৪টি চলচ্চিত্রে কাজ করেছেন। সালমান ছিলেন জনপ্রিয়, শক্তিমান এবং অত্যন্ত প্রতিভাবান। তাঁর সঙ্গে কাজ করে শাবনূরের চলচ্চিত্র ক্যারিয়ারও বিকশিত হয়েছে। বললেন, ‘সালমানের অকালমৃত্যু আমাকে গভীরভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করেছিল। আমাদের জুটির সাফল্য অনেকের ঈর্ষার কারণও হয়েছিল। তবে আজও আমি স্পষ্ট করে বলতে চাই, সালমান শাহ কীভাবে মারা গেছেন, তা আমি জানি না। আমি শুধু চাই তাঁর মৃত্যুর সঠিক তদন্ত ও ন্যায়বিচার হোক। যে-ই দোষী হোক না কেন, তাকে আইনের আওতায় এনে যথাযথ শাস্তি দেওয়া হোক। এটি আমার একান্ত দাবি।’
১৯৯৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর সালমান শাহর মৃত্যু সংবাদ পেয়ে ছুটে গিয়েছিলেন শাবনূর। বাংলারসময় ডটকমকে তিনি সেদিনের ঘটনা প্রসঙ্গে বলেছিলেন এভাবে, ‘সালমানের মৃত্যু সংবাদটা যখন পাই, তখন আমি বাসায় ছিলাম। হঠাৎ করে কে যেন ফোন করে জানায়, সালমান শাহ মারা গেছে। আমি উল্টো ধমক দিয়ে বলি, কী বলে এসব! আমার ছোট বোন বাইরে গিয়ে সালমানের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত হয়ে আসে। আমি তখন পুরোপুরি হতবাক হয়ে যাই। এরপর এফডিসিতে সালমানকে দেখতে যাই।’
এদিকে আজ সোমবার এক পোস্টে শাবনূর লিখেছেন সন্তান হারানোর বেদনা নিয়েও কথা। সালমান শাহর মায়ের আহাজারি দেখলে তা সহজে বোঝা যায় বলেও জানান তিনি। পোস্টে শাবনূর লিখেছেন, ‘সালমান শাহর মা নীলা আন্টির আহাজারি দেখলেই বোঝা যায় সন্তান হারানোর বেদনা কতটা গভীর। তিনি তাঁর এবং তাঁর পরিবারের প্রতি আন্তরিক সহমর্মিতা জানাই এবং সালমান শাহর আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি।’