Oops! It appears that you have disabled your Javascript. In order for you to see this page as it is meant to appear, we ask that you please re-enable your Javascript!
ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৩০ মার্চ, ২০২৩  |  Thursday, 30 March 2023  |  এখন সময়:

Advertise@01680 34 27 34

সপ্ন যাদের বিসিএস: অভিজ্ঞদের পরামর্শ


অনলাইন ডেস্কঃ

প্রকাশিত:   ০৫:১২ এএম, সোমবার, ৩ ডিসেম্বর ২০১৮   আপডেট:   ০৫:১১ এএম, বুধবার, ১৭ নভেম্বর ২০২১  
সপ্ন যাদের বিসিএস: অভিজ্ঞদের পরামর্শ
সপ্ন যাদের বিসিএস: অভিজ্ঞদের পরামর্শ

বর্তমান সময়ে তরুণরা ক্যারিয়ার হিসেবে বিসিএসকেই প্রথমে স্থান দিয়েছে। তবে বিসিএস ক্যাডার হওয়ার স্বপ্ন দেখা যতটা সহজ; এ স্বপ্ন পূরণ ততটা বন্ধুর নয়। এর জন্য পরিশ্রমের যেমন প্রয়োজন রয়েছে; তেমনি কৌশলীও হতে হয়। বিসিএস যাত্রায় সফল হওয়া কয়েকজন সেরাদের পরামর্শ জানাচ্ছেন— এম এম মুজাহিদ উদ্দীন


শুরু থেকেই হোক প্রস্তুতি
—রহমত আলী শাকিল
পররাষ্ট্র ক্যাডারে ১ম, ৩৭তম বিসিএস

বিসিএসকে অনেকেই মুখস্থকেন্দ্রিক পরীক্ষা হিসেবে ট্রল করলেও মূলত এখানে আপনার সম্পূর্ণ শিক্ষাজীবনের অর্জিত জ্ঞানের প্রতিফলন ঘটানো হয়। তাই আপনার জীবনের লক্ষ্য যদি হয় বিসিএস, তবে একাডেমিক পড়াশোনার পাশাপাশি ইংরেজি, গণিত, বিজ্ঞান আর বাংলা ব্যাকরণের দুর্বলতা সর্বোচ্চ শ্রম দিয়ে হলেও কাটাতে হবে, কারণ এগুলোই বিসিএসের ফল নির্ধারণী বিষয়। সেই সাথে ইংরেজি ও বাংলা শুদ্ধভাবে বলতে শেখা, হাতের লেখা দ্রুত করা, জীবনবৃত্তান্ত লেখা, মাইক্রোসফট অফিস ও কম্পিউটার স্কিল ডেভেলপ করা জরুরি। নিয়মিত পত্রিকা পড়া, বিশেষ করে সম্পাদকীয়, উপ-সম্পাদকীয়, অর্থনীতি ও বিশ্ব রাজনীতি বিষয়ক আর্টিকেল; সে সাথে একই খবর ইংরেজি পত্রিকা থেকে পড়ে নতুন নতুন ইংরেজি শব্দ রপ্ত করার বিকল্প নেই। গতানুগতিক না লিখে নিজের মতো গুছিয়ে লেখা একটি আর্ট, সেটা এ সময়টাতেই রপ্ত করা উচিত। খেলা দেখা, মুভি দেখা, ঘুরতে যাওয়া, সমসাময়িক বিভিন্ন ইস্যুতে বন্ধুদের সাথে আলোচনা করার অভ্যাস রাখা উচিত। মানসিক দক্ষতা বাড়ানোর জন্য বিভিন্ন অ্যাপ ও বই থেকে অনুশীলন করতে হবে। পড়াশোনা ও এক্সটা-কারিকুলার অ্যাক্টিভিটির অভ্যাস রাখার বিকল্প নেই।


কোচিং করার প্রয়োজন নেই
—হাসিবুর রহমান এমিল
প্রশাসন ক্যাডারে ২য়, ৩৭তম বিসিএস

বিসিএস পরীক্ষার জন্য অনেকেই কোচিং করে থাকেন। তবে আমার পরামর্শ কোচিং না করে নিজে নিজেই প্রস্তুতি নেয়া। নিজেই যদি সঠিক পরিকল্পনার মাধ্যমে প্রস্তুতি নেয়া যায় তা হলে অনেক সময় বেঁচে যাবে। আমার কাছে কোচিং করা নিছকই সময়ের অপচয় মনে হয়। আর স্নাতক সম্পন্ন করা একজন মানুষের জন্য কোচিং এর প্রয়োজন আছে মনে করি না। তবু কেউ যদি মনে করেন কোচিং ছাড়া চলবেই না সেক্ষেত্রে করতে পারেন। বিসিএস প্রস্তুতির জন্য গ্রুপ স্টাডি বেশ সহায়ক হতে পারে। তবে গ্রুপ স্টাডি করতে গিয়ে অনেকেই মূলত গল্প, আড্ডায় ব্যস্ত থাকেন এবং নিজের অজান্তেই লক্ষ্যচ্যুত হয়ে যান। কাজেই গ্রুপ স্টাডির ক্ষেত্রে কাদের নিয়ে গ্রুপ করবেন সেটা গুরুত্বপূর্ণ। ভালো একটা গ্রুপ করতে পারলে প্রস্তুতি অনেক নিখুঁত এবং সহজ হবে। অনেকেই দলবেঁধে পড়াশুনায় অভ্যস্ত নয়, তাদের বলবো নিজের মতো করে পড়ুন। অন্যের দেখাদেখি গ্রুপ স্টাডি করতে যাবেন না। বিসিএস প্রস্তুতির প্রথম ধাপ হচ্ছে নিজেকে আবিষ্কার করা। নিজেই ঠিক করুন আপনার কোচিং লাগবে কিনা কিংবা গ্রুপ স্টাডি আপনার জন্য ভালো হবে কিনা। সবার জন্য শুভকামনা।


চাকরিজীবীদের বিসিএস প্রস্তুতি
—মোহাম্মদ কামাল হোসেন
পরিসংখ্যান ক্যাডারে ১ম, ৩৬তম বিসিএস

আপনি যেহেতু চাকরি পেয়েছেন, ধরেই নিচ্ছি চাকরির পড়াশোনা সম্পর্কে আপনার যেমন ভালো ধারণা আছে, তেমন দখলও আছে। এখন সেটার রিভিশন এবং নতুন জ্ঞান যুক্ত করাটাই হবে কাজ। একজন চাকরিজীবীর পক্ষে কতটা সময় বের করা সম্ভব? অফিস টাইম আট ঘণ্টা, আগে পিছে আরও দুই ঘণ্টা খরচ হলে- এখানে ১০ ঘণ্টা শেষ। ছয় ঘণ্টা ঘুম এবং অন্যান্য প্রয়োজনে এক ঘণ্টা ব্যয় করলে- এখানে ৭ ঘণ্টা শেষ। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে অবশিষ্ট থাকে ৭ ঘণ্টা। এই সময়টাকে দুইটা ভাগে পাওয়া যাবে। অফিসের পূর্বে ৩ ঘণ্টা এবং অফিসের পরে ৪ ঘণ্টা। তবে অনেকের জন্য ৪ ঘণ্টা ঘুমই যথেষ্ট। তিনি নিজের সুবিধামতো ৭/৮ ঘণ্টা সময় বের করে নিতে পারেন। এবার রিভিশনের জন্য তিন ঘণ্টা ব্যয় করুন, বাকি সময়টুকুতে নিজের দুর্বলতা নিয়ে কাজ করুন। শুক্র-শনি ডে-অফ, আপনার জন্য আশীর্বাদ। এই দুই দিন কমপক্ষে ১৬ ঘণ্টা করে পড়াশোনা করার চেষ্টা করুন। টেস্ট বই থেকে তথ্যগুলো শিখুন। পড়াশোনা-বিষয়ক বিভিন্ন ফেসবুক পেজ এবং বিভিন্ন ওয়েবসাইট থেকে পড়াশোনা করতে পারেন।


যা অবশ্যই করা উচিত
—মো. হালিমুল হারুন লিটন
পুলিশ ক্যাডারে প্রথম, ৩৭তম বিসিএস

প্রথমেই সিলেবাস সম্পর্কে বুঝতে হবে। নিজের শক্তি ও দুর্বলতার টপিকগুলো আলাদা করতে হবে। প্রতিদিন সংবাদপত্র/ মোবাইলে অ্যাপসের মাধ্যমে সাম্প্রতিক ঘটনাবলি সম্পর্কে ওয়াকিবহাল থাকতে হবে। আবেগের জায়গা থেকে দূরে সরে প্রস্তুতি নিতে হবে। সময়ের সর্বোচ্চ ব্যবহার করা উচিত। নিজেকে যাচাই করার জন্য মডেল টেস্ট অনুসরণ করা উচিত। ভুলগুলো নিয়ে আরও মনোযোগী হতে হবে। বিগত বছরের প্রশ্নগুলো অপশনসহ পড়তে হবে। অপশনের যেগুলো উত্তর নয়, সেগুলো থেকে কিভাবে প্রশ্ন হতে পারে তা বুঝতে হবে। নবম-দশম শ্রেণির বই ও অন্যান্য রেফারেন্স বই যথাসম্ভব পড়ার চেষ্টা করতে হবে। শর্টকার্ট সাফল্যের জন্য বাধা হতে পারে। তাই যথাসম্ভব বিস্তারিত প্রস্তুতি নেয়া উচিত। ভাগ্যের ওপর ছেড়ে না দিয়ে কৌশলগত পরিশ্রম করলে অনেক কিছুই সম্ভব।


যা এড়িয়ে চলা উচিত
—মো. আল আমিন
সমবায় ক্যাডারে প্রথম, ৩৭তম বিসিএস

বিসিএস শুধু একটি চাকরি নয়, একটি স্বপ্ন এবং সাধনা। এই স্বপ্ন পূরণের প্রস্তুতির সাথে আপনার কয়েকটি ভুল সিদ্ধান্ত প্রস্তুতিকে পিছিয়ে দেয়, সফলতার পথকে করে বন্ধুর। অনেকের কাছে শুনতে পাই ‘কোন বিষয় দিয়ে শুরু করব এবং কিভাবে করব?’ আমার কথা হলো- আপনি যে বিষয়ে দুর্বল সেই বিষয় দিয়ে শুরু করুন এবং বারবার লিখে পড়ার অভ্যাস তৈরি করুন। আপনার দ্রুত মুখস্থ হতে পারে কিন্তু এর স্থায়িত্ব কম। লিখে পড়লে পড়া দ্রুত আয়ত্ত এবং দীর্ঘদিন মনে রাখা যায়। আপনি এমন কোনো ক্যাডার খুঁজে পাবেন না যে, লিখে পড়েননি। বাজারে অনেক বই পাবেন, কিন্তু আপনার টার্গেট যেন হয় বোর্ড বই। পত্রিকা পড়ার অভ্যাস করুন। আন্তর্জাতিক বিষয়ের অধিকাংশ প্রশ্ন হয় পত্রিকা থেকে। ক্যাডার হতে হলে গাইড বইয়ের বাইরে আসতে হবে। বিসিএস পরীক্ষা একটি ভালো লাগার বিষয়, এটা জোর করে হয় না। তাই পড়ার প্রতি ভালো লাগা তৈরি করেন। যতক্ষণ মন চায়, পড়ুন। টিভি দেখবেন, তবে বিনোদন নয়, খবর। সফলতা থাকবে হাতের নাগালে।


আপনার মন্তব্য লিখুন...