ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ, ২০২৪  |  Thursday, 28 March 2024  |  এখন সময়:

Advertise@01680 34 27 34

রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধান না হলে নিরাপত্তা সংকটের আশঙ্কা


অনলাইন ডেস্কঃ

প্রকাশিত:   ০৪:০৯ এএম, শুক্রবার, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০১৭    
রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধান না হলে নিরাপত্তা সংকটের আশঙ্কা
রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধান না হলে নিরাপত্তা সংকটের আশঙ্কা

মিয়ানমারে সম্প্রতি রোহিঙ্গাদের ওপর হামলার ঘটনাকে এ অঞ্চলের স্থিতিশীলতা নষ্ট করার উদ্দেশ্য বলে মনে করছে বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতি। সেই সঙ্গে উঠতি অর্থনীতির বাংলাদেশকে অস্থিতিশীল করাও এর পেছনে অন্যতম কারণ বলে মনে করা হচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে ভারত, চীন, জাপান, রাশিয়ার মতো বন্ধুপ্রতীম দেশের

ভূমিকাকে ‘রহস্যজনক’ আখ্যা দিয়ে এ ইস্যুতে বাংলাদেশকে কূটনৈতিকভাবে অগ্রসর হওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে। সেই সঙ্গে দেশের অভ্যন্তরে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি সমুন্নত রাখা এবং কোনো উসকানিতে এটি যাতে ক্ষুণ্ন না হয়, সে জন্য সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে। রোহিঙ্গা ইস্যুতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সমিতির পক্ষ থেকে এ সব কথা বলা হয়। মিয়ানমারে রোহিঙ্গা নিধনের প্রতিবাদে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে অর্থনীতি সমিতির সাবেক সভাপতি ও অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. আবুল বারকাত বিস্তারিত তুলে ধরেন।


সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, দেশে প্রায় এখন পর্যন্ত ৯ লাখ রোহিঙ্গা রয়েছে। এর ফলে জঙ্গি ও মৌলবাদী গোষ্ঠি মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে পারে বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়। ড. আবুল বারকাত বলেন, রোহিঙ্গা নিয়ে মৌলবাদীদের মধ্যে এক ধরনের ‘উল্লাস’ দেখা যাচ্ছে। তারা মনে করতে পারে, এর ফলে তাদের ক্ষমতায় যাওয়ার পথ সুগম হবে। এ ছাড়া রোহিঙ্গা সমস্যার শান্তিপূর্ণ ও স্থায়ী সমাধান না হলে তা এ অঞ্চলের জন্য বিশেষত, চীন, ভারতসহ মিয়ানমারের প্রতিবেশী দেশগুলোর জন্য একটি প্রধান ও স্থায়ী নিরাপত্তা সমস্যা সৃষ্টি করবে বলেও আশঙ্কা করা হয়। আবুল বারকাত বলেন, প্রাকৃতিক ও ভূ-রাজনৈতিক সম্পদ লুটেরা গোষ্ঠি ও আন্তর্জাতিক ধর্মীয় উগ্রপন্থি গ্রুপগুলো আগে থেকেই সক্রিয় আছে। তাই সংশ্লিষ্ট দেশের সরকার ও জনগণকে এ বিষয়ে এখনই সতর্ক হওয়া দরকার।


এ সময় দেশটিতে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠির উপর অত্যাচারকে গণহত্যা, জাতিগত নিধন ও সমাজ-গোষ্ঠী হত্যা হিসেবে অভিহিত করা হয়। সংগঠনের পক্ষ থেকে বলা হয়, এ সমস্যা খুব দ্রুত সমাধান হওয়ার কোনো কারণ নেই। তাই এ সমস্যা মোকাবিলায় দীর্ঘমেয়াদি জাতীয় কর্মপরিকল্পনা নেওয়া এবং রোহিঙ্গাদের দেশে ফেরত পাঠাতে বিশ্ব জনমত গড়ে তুলতে বহুমুখী কর্মসূচি প্রণয়নে সরকারকে যৌথ কর্মপন্থা গ্রহণের উদ্যোগ নিতে হবে। এক্ষেত্রে প্রবাসী বাংলাদেশি নাগরিকদেরও সক্রিয় হতে হবে। এ জন্য কূটনৈতিক তত্পরতাকে জোরদার করে এ বিষয়ে বিশ্ব জনমত গড়ে তোলা বিশেষত সম্প্রতি জাতিসংঘের অধিবেশনে সংকট সমাধানে প্রধানমন্ত্রীর পাঁচ দফা প্রস্তাব দ্রুত ও কার্যকরভাবে বাস্তবায়নেরও আহ্বান জানানো হয়।


রোহিঙ্গা সংকটের কারণে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক ক্ষতির প্রভাব কী হতে পারে— সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে আবুল বারকাত বলেন, এত সহজে ও স্বল্প সময়ে এর ক্ষতির প্রভাব পরিমাপ করা সম্ভব নয়। তবে বড় ধরনের  ঝামেলা এড়াতে রোহিঙ্গাদের একটি নির্দিষ্ট জায়গায় রাখার পক্ষে মত দেন তিনি।


এছাড়া রোহিঙ্গা নিয়ে ত্রাণ সচিবের বক্তব্যের সমালোচনা করেন আবুল বারকাত। সম্প্রতি ত্রাণ সচিব রোহিঙ্গাদের শরণার্থীর মর্যাদা দেওয়া হয়নি জানিয়ে অনুপ্রবেশকারী হিসেবে আখ্যায়িত করেন। এর সমালোচনা করে আবুল বারকাত বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যেখানে জাতিসংঘে বাংলাদেশে রোহিঙ্গাদের শরণার্থী বলেছেন, ত্রাণ সচিব সেখানে রোহিঙ্গাদের অনুপ্রবেশকারী হিসাবে উল্লেখ করেছেন। এটা ‘বাঁশের চেয়ে কঞ্চি বড়’র মতো অবস্থা।


সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে অর্থনীতি সমিতির সভাপতি ড. আশরাফ উদ্দিন চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক ড. জামাল উদ্দিন আহমেদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

আপনার মন্তব্য লিখুন...