ঢাকা, শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪  |  Friday, 29 March 2024  |  এখন সময়:

Advertise@01680 34 27 34

বাজেট বরাদ্দ এখন রাজনৈতিক অর্থনৈতিক ব্যাপার


অনলাইন ডেস্কঃ

প্রকাশিত:   ০৫:০৪ পিএম, শনিবার, ২ এপ্রিল ২০২২   আপডেট:   ০৫:০৪ পিএম, শনিবার, ২ এপ্রিল ২০২২  
বাজেট বরাদ্দ এখন রাজনৈতিক অর্থনৈতিক ব্যাপার
বাজেট বরাদ্দ এখন রাজনৈতিক অর্থনৈতিক ব্যাপার

বাজেট বরাদ্দের ক্ষেত্রে সরকারের রাজনৈতিক বাধ্যবাধকতার কথা জানালেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান। তিনি বলেন, বাজেট বরাদ্দ এখন রাজনৈতিক অর্থনৈতিক ব্যাপার। কিছু বাধ্যবাধকতা আছে, কিছু ঠেকার মধ্যে থাকে সরকার। এ ছাড়া কিছু কায়েমি স্বার্থ আছে। হঠাৎ করেই এটা বদলানো যাবে না।

শনিবার দ্য ইনস্টিটিউট অব চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টস অব বাংলাদেশ (আইসিএবি) ও অর্থনীতিবিষয়ক প্রতিবেদকদের সংগঠন ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরাম (ইআরএফ) আয়োজিত বাজেট আলোচনায় পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান এসব কথা বলেন। এর আগে শিক্ষা, স্বাস্থ্যসহ বিভিন্ন খাতের বরাদ্দ বৃদ্ধির সুপারিশ করেন বক্তারা। কেউ কেউ জ্বালানি ও সারে ভর্তুকি কমানোর কথাও বলেন। এমন প্রস্তাবের জবাবে পরিকল্পনামন্ত্রী এসব কথা বলেন।

কারওয়ান বাজারের আইসিএবি মিলনায়তনে এ আলোচনা হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন আইসিএবি সভাপতি শাহাদত হোসেন।

পরিকল্পনামন্ত্রী আরও বলেন, ‘সুশীল সমাজ আমাদের বকাঝকা করেন। তাঁদের কাছ থেকে উপদেশও আশা করি। গত ১২ বছরে দেশের দৃশ্যমান উন্নয়ন করেছেন শেখ হাসিনা। এটাকে অস্বীকার করতে পারবেন না। কেন প্রত্যাখ্যান করবেন? এটা মেনে নিন।’ তিনি আরও বলেন, ‘কেউ কেউ বলেন, সংবিধান মানি না, সংবিধান মানব না, নির্বাচনে যাব না’—এটা বলে জনসমাজে একটা পরিবেশ সৃষ্টি করা হয়। তিনি আরও বলেন, ছোটবেলা হাডুডু খেলা কেউ কেউ ভন্ডুল করত। এখন যাঁরা খেলা ভন্ডুল করতে চান, তাঁদের ভন্ডুল করার প্রয়াস থেকে বের হয়ে আসতে হবে। পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান মনে করেন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) ‘ভয়ংকর’ সংস্কার দরকার।

শিক্ষা খাতের জন্য আলাদা পূর্ণাঙ্গ বাজেট প্রণয়নের সুপারিশ করেন সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা রাশেদা কে চৌধূরী। তিনি বলেন, সরকার বিভিন্ন খাতে মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। কিন্তু শিক্ষার জন্য কোনো মেগা প্রকল্প নেই।

একই অনুষ্ঠানে বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর বলেন, চলতি অর্থবছরে ৯ হাজার ডলারের আমদানি হতে পারে। আমদানির জন্য এক টাকা কোথায় পাব? এখন থেকে ভাবা উচিত। তা না লেনদেনের ভারসাম্য বিনষ্ট হতে পারে।

সরকারি খরচ কমানোর পরামর্শ দিয়ে আহসান এইচ মনসুর বলেন, এ দেশের সচিবেরা একজন নিরাপত্তারক্ষী নিয়ে ঘোরেন। ভারত, যুক্তরাষ্ট্রসহ পৃথিবীর কোনো সভ্য দেশে এমন ব্যবস্থা নেই। সচিবদের চকচকে পাজেরো জিপ দিতে হয়। তা না হলে স্ট্যাটাস থাকে না। এমন অতিরিক্ত খরচ করার প্রবণতা কমাতে হবে। যখন সামর্থ্য হবে, তখন এসব সুবিধা দেওয়া যেতে পারে।

এনবিআরকে অটোমেশন করার তাগিদ দিয়ে আহসান এইচ মনসুর আরও বলেন, রিটার্ন জমা দিয়ে মূল্যায়নের জন্য অফিসে যেতে যেতে যেন করদাতার জুতার তলা ক্ষয় হয়ে না যায়। এগুলো থাকলে কর কর্মকর্তাদের ‘নজরানা বক্স’ ভর্তি হবে।

মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এমসিসিআই) সভাপতি সাইফুল ইসলাম বলেন, করোনার আগে অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা বাস্তবায়ন শুরু হয়। এখন করোনার কারণে পরিস্থিতি বদলে গেছে। তাই অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা পুনর্মূল্যায়ন করা উচিত। এ ছাড়া সব রপ্তানিমুখী প্রতিষ্ঠানের জন্য তৈরি পোশাকের মতো ১০-১২ শতাংশ করপোরেট কর করা উচিত।

সরকারি ব্যয় পর্যালোচনা কমিশন ও ব্যাংক খাত সংস্কার কমিশনের মতো কমিশন গঠনের সুপারিশ করেন প্রথম আলোর হেড অব অনলাইন শওকত হোসেন। তিনি বলেন, তখন যে পরিস্থিতি বিবেচনা করে এসব কমিশন গঠন করা হয়েছিল, এখনো এসব কমিশন গঠন অত্যাবশ্যক হয়ে গেছে।

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন ঢাকা চেম্বারের সাবেক দুই সভাপতি আসিফ ইব্রাহিম ও আবুল কাসেম খান, ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের চেয়ারম্যান ইউনুসুর রহমান, ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইয়ের উপদেষ্টা মনজুর আহমেদ, ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ই-ক্যাব) সভাপতি শমী কায়সার, আইসিএবির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শুভাশীষ বসু, ইআরএফর সভাপতি শারমীন রিনভী, সাধারণ সম্পাদক এস এম রাশিদুল ইসলাম প্রমুখ। সঞ্চালনা করেন আইসিএবির সাবেক সভাপতি হুমায়ূন কবির।

অর্থনীতি থেকে আরও পড়ুন

অর্থনীতি বাজেট পরিকল্পনামন্ত্রী

আপনার মন্তব্য লিখুন...