Oops! It appears that you have disabled your Javascript. In order for you to see this page as it is meant to appear, we ask that you please re-enable your Javascript!
ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৩০ মার্চ, ২০২৩  |  Thursday, 30 March 2023  |  এখন সময়:

Advertise@01680 34 27 34

বাইডেন হারলে ফিরবেন ট্রাম্প, নয়তো ট্রাম্পের ছায়া


অনলাইন ডেস্কঃ

প্রকাশিত:   ০৯:০৩ পিএম, সোমবার, ৬ মার্চ ২০২৩   আপডেট:   ০৯:০৩ পিএম, সোমবার, ৬ মার্চ ২০২৩  
বাইডেন হারলে ফিরবেন ট্রাম্প, নয়তো ট্রাম্পের ছায়া
বাইডেন হারলে ফিরবেন ট্রাম্প, নয়তো ট্রাম্পের ছায়া

যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন যত ঘনিয়ে আসছে, ততই বিশ্ববাসী আমেরিকার অভ্যন্তরীণ ও বিদেশনীতির আরেক দফা গতি পরিবর্তনের আশঙ্কায় দুশ্চিন্তাগ্রস্ত হয়ে পড়ছে। ২০২৪ সালের নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্প ফিরে আসতে পারেন এবং আরেক দফা আমেরিকার গণতন্ত্র এবং বিশ্বরাজনীতিতে বিদ্যমান দেশটির ভূমিকা হুমকিতে পড়তে পারে বলে ওয়াশিংটনের মিত্রদের মধ্যে উৎকণ্ঠা কাজ করছে।

রাশিয়া ও চীনের বিষয়ে ওয়াশিংটনের গৃহীত নীতি সমর্থনে অধিকাংশ রাষ্ট্রেরই উদাসীনতা আছে। কারণ, গত দুই–তিন দশকের মার্কিন প্রশাসনগুলো যেভাবে অভ্যন্তরীণ ও পররাষ্ট্রনীতিতে অদলবদল করেছে, আগামী প্রশাসনও যে বিদ্যমান নীতি থেকে একেবারে উল্টো পথে হাঁটা ধরবে না, তার কোনো নিশ্চয়তা নেই। বুশ প্রশাসনের সাম্রাজ্যবাদী নীতি থেকে ওবামার প্রায়োগিক বাস্তবতার নীতি; ট্রাম্পের ‘আমেরিকা ফার্স্ট’ শীর্ষক জাতীয়তাবাদ থেকে সর্বশেষ বাইডেনের ‘আমেরিকার স্বমূর্তিতে ফিরে আসার’ নীতি আমাদের সামনে আমেরিকান নেতৃত্বের নিয়ত পরিবর্তনশীল নীতিকেই তুলে ধরে।

অথচ আমেরিকার প্রশাসনের নীতিতে স্থিতিশীলতা বাকি বিশ্বের জন্য জরুরি। মস্কো ও বেইজিংয়ের ক্ষমতায় কে বসতে যাচ্ছে, তা নিয়ে বিশ্বনেতাদের উৎকণ্ঠায় না থাকলেও চলে, কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রে আগামী নির্বাচনে কে প্রেসিডেন্ট হতে যাচ্ছেন, সে বিষয়ে যৌক্তিক কারণেই তাদের সীমাহীন আগ্রহ থাকে।

সম্প্রতি ফ্লোরিডায় সফর করার সময় এই চিন্তা আমার মাথায় এসেছে। এই অঙ্গরাজ্য রিপাবলিকান পার্টির মনোনয়ন পাওয়ার দৌড়ে এগিয়ে থাকা দুই নেতার একজন হলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প, যিনি গত বছরই নির্বাচনে লড়বেন বলে ঘোষণা দিয়েছেন। আরেকজন হলেন ফ্লোরিডার গভর্নর রন ডিস্যান্টিস, যিনি আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই প্রার্থিতার কথা ঘোষণা করবেন বলে মনে করা হচ্ছে।

ট্রাম্প যদি ফিরে আসেন, তাহলে তিনি বাইডেনের সব নীতিকে ওলটপালট করে দিয়ে আবার তাঁর ‘মেক আমেরিকা গ্রেট অ্যাগেইন’ নীতিতে ফিরে যাবেন। আর যদি ডিস্যান্টিস ক্ষমতায় আসেন, তাহলেও ট্রাম্পের সেই ‘মেক আমেরিকা গ্রেট অ্যাগেইন’ নীতি ফিরবে, যদিও ট্রাম্পসুলভ নাটকের মধ্য দিয়ে নয়। তাঁরা দুজনই পরীক্ষিত জনতুষ্টিবাদী জাতীয়তাবাদী নেতা এবং দুজনই বৈশ্বিক গণতন্ত্রের সামনের সারিতে থেকে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্ব দেওয়ার বিরুদ্ধে থাকা লোক।

ডেমোক্রেটিক দল থেকে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন নির্বাচনে দাঁড়াবেন বলে আশা করা হচ্ছে, যদিও দ্বিতীয় মেয়াদে নির্বাচন করার সময় তাঁর বয়স ৮৬ বছরে গিয়ে দাঁড়াবে এবং বয়সের কারণে তিনি আদৌ নির্বাচন করতে পারবেন কি না, তা নিয়ে কেউ কেউ সন্দেহ প্রকাশও করছেন। অনেকেই বলছেন, আগামী নির্বাচনে অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক ও ব্যক্তিগত ইস্যু বড় বিষয় হয়ে সামনে দাঁড়াবে।

বাইডেন এখন পর্যন্ত প্রেসিডেন্ট পদ এবং অর্থনীতি ভালোই সামলাচ্ছেন। তবে উচ্চ মূল্যস্ফীতি ও সম্ভাব্য মন্দা আগামী নির্বাচনে তাঁর খুঁটিকে নড়বড়ে করে দিতে পারে। ট্রাম্পের কারণে ন্যাটোর ওপর থেকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাব যেভাবে কমে গিয়েছিল, ইউক্রেনে রাশিয়ার অভিযানের পর বাইডেন তা ফিরিয়ে এনেছেন। তবে রাশিয়ার বিরুদ্ধে ব্যয়বহুল প্রক্সিযুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রকে জড়ানোর বিষয়টি না বাইডেনের জন্য, না যুক্তরাষ্ট্রের জন্য কল্যাণকর হয়েছে। তবে বাইডেনের বার্ধক্য দেখে যদি ভোটাররা মনে করতে শুরু করেন নির্বাচনের পরবর্তী চার বছর দেশ চালানোর শারীরিক সক্ষমতা তাঁর নেই, তাহলে এসব অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি ও জাতীয় নিরাপত্তার কৃতিত্ব খুব কমই কাজে আসবে।

অন্যদিকে, ট্রাম্প তাঁর দলীয় মনোনয়ন পেতে রিপাবলিকান পার্টির নীতিনির্ধারক ও দলের সদস্যদের মন জয়ে সর্বাত্মক চেষ্টা করছেন। বিশেষ করে দলের ভেতরে তাঁর বিরুদ্ধে থাকা তাঁর নিজের সাবেক মন্ত্রিসভার সদস্য ও প্রেসিডেন্ট প্রার্থী নিক্কি হ্যালি, মাইক পেন্স ও মাইক পম্পেওকে ঠেকাতে তিনি মরিয়া হয়েছেন। সেটি তাঁর জন্য হয়তো খুব কঠিনও হবে না।

তবে বয়সে তরুণ ডিস্যান্টিস এখন দৃশ্যপটে উঠে এসেছেন। ফ্লোরিডার দুবারের গভর্নর নির্বাচিত হওয়া এই নেতা ট্রাম্প ও বাইডেন দুজনকেই পরাস্ত করতে সক্ষম বলে অনেকে মনে করছেন। ট্রাম্পের মতো তাঁর বিরুদ্ধে যৌন হয়রানি, আর্থিক ও রাজনৈতিক কেলেঙ্কারির অভিযোগ নেই। তিনি সোজাসাপ্টা কথা বলেন এবং ট্রাম্পের মতো মিথ্যা বলেন না। তবে তিনি ট্রাম্পের মতোই কঠোর রক্ষণশীল এবং ‘জনগণের’ নামে তিনি দেশব্যাপী উদারপন্থীদের বিরুদ্ধে ‘সাংস্কৃতিক যুদ্ধ’ চালানোর প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন।

এ অবস্থায় এটি নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে, ট্রাম্প যদি ফিরে আসেন, তাহলে তিনি বাইডেনের সব নীতিকে ওলটপালট করে দিয়ে আবার তাঁর ‘মেক আমেরিকা গ্রেট অ্যাগেইন’ নীতিতে ফিরে যাবেন। আর যদি ডিস্যান্টিস ক্ষমতায় আসেন, তাহলেও ট্রাম্পের সেই ‘মেক আমেরিকা গ্রেট অ্যাগেইন’ নীতি ফিরবে, যদিও ট্রাম্পসুলভ নাটকের মধ্য দিয়ে নয়। তাঁরা দুজনই পরীক্ষিত জনতুষ্টিবাদী জাতীয়তাবাদী নেতা এবং দুজনই বৈশ্বিক গণতন্ত্রের সামনের সারিতে থেকে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্ব দেওয়ার বিরুদ্ধে থাকা লোক। তাঁদের যেকোনো একজন গদিতে বসলে ইউক্রেন ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকা গুটিয়ে আনা হবে। 

আল–জাজিরা থেকে নেওয়া, ইংরেজি থেকে অনূদিত

মারওয়ান বিশারা আল–জাজিরার জ্যেষ্ঠ রাজনৈতিক বিশ্লেষক

মতামত থেকে আরও পড়ুন

জো বাইডেন ডোনাল্ড ট্রাম্প মারওয়ান বিশারা লেখকের মতামত

আপনার মন্তব্য লিখুন...