নিজ জনগণের বিরুদ্ধে যুদ্ধে মিয়ানমার জান্তা: জাতিসংঘ
অনলাইন ডেস্কঃ
প্রকাশিত: ০৪:০৩ পিএম, শনিবার, ৪ মার্চ ২০২৩ আপডেট: ০৪:০৩ পিএম, শনিবার, ৪ মার্চ ২০২৩
মিয়ানমারের সামরিক শাসকেরা এখন দেশের বেসামরিক নাগরিকদেরই তাঁদের শত্রু হিসেবে দেখছেন। নিজ দেশের নাগরিকদের বিরুদ্ধেই জান্তা যুদ্ধে লিপ্ত। জনগণের বেঁচে থাকার মৌলিক চাহিদার প্রতি তাঁদের কোনো ভ্রুক্ষেপ নেই। সামরিক শাসনের দুই বছরের পরিস্থিতি নিয়ে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে গত শুক্রবার জাতিসংঘ এসব কথা বলেছে।
অং সান সু চির সামরিক সরকারকে উৎখাত করে ২০২১ সালের ১ ফেব্রুয়ারি ক্ষমতা দখল করে সামরিক বাহিনী। এর পর থেকে গত দুই বছরের পরিস্থিতিকে ‘ভয়াবহ বিপর্যয়’ বলে মন্তব্য করেছেন জাতিসংঘের মানবাধিকার প্রধান ভলকার টার্ক। তিনি আরও বলেন, ‘সম্পূর্ণ দায়মুক্তি’ নিয়ে কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছে সামরিক বাহিনী।
প্রতিবেদনে জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয় বলেছে, এই দুই বছরে কমপক্ষে ২ হাজার ৯৪০ জন নিহতের সত্যতা নিশ্চিত হওয়া গেছে। তাঁদের ৩০ শতাংশই আটক অবস্থায় নিহত হয়েছেন। অবশ্য নিহতের প্রকৃত সংখ্যা আরও অনেক বেশি হবে বলে মনে করা হচ্ছে।
জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয়ের মিয়ানমার টিমের প্রধান জেমস রোডেহাভের বলেন, বর্তমানে প্রায় ১৩টি পৃথক ফ্রন্টে সক্রিয়ভাবে যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছে সশস্ত্র বাহিনী। জেনেভায় সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, এর ফলে নির্দিষ্ট এলাকায় সামরিক বাহিনীর সদস্যদের উপস্থিতি ক্রমেই কমছে। এ জন্য স্থলবাহিনীকে সুবিধা করে দিতে ক্রমেই বিমান হামলা ও গোলাবর্ষণের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়ছে সামরিক বাহিনী। গত বছর তিন শতাধিক বিমান হামলা চালানো হয়েছিল।
প্রতিবেদনে বলা হয়, বিদ্যালয় ও হাসপাতালেও প্রাণঘাতী হামলা চালানো হয়েছে। দেশটির ৩৩০টি পৌর এলাকার প্রায় ৮০ শতাংশতেই সশস্ত্র সংঘাতের প্রভাব পড়েছে। রোডেহাভের বলেন, এর আগে মিয়ানমারের কোনো সংকটে কখনো এ ধরনের পরিস্থিতি তৈরি হয়নি, যা এত দূর গিয়ে ঠেকেছে। এই সংকট দেশজুড়ে বিস্তৃত।
জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয়ের মিয়ানমার টিমের প্রধান আরও বলেন, অতীতের সংঘাতগুলো ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠী অধ্যুষিত রাজ্যগুলোতে অনেক বিচ্ছিন্নভাবে ছিল। বর্তমানে এ সংঘাত এমনকি বামার (বার্মিজ) কেন্দ্রস্থল পর্যন্ত পৌঁছে গেছে।
জাতিসংঘের এই প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারির পর থেকে সামরিক অভিযানে দেশজুড়ে প্রায় ৩৯ হাজার ঘরবাড়ি পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে বা ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে। এই সংখ্যা আগের বছরের চেয়ে এক হাজার গুণের বেশি। এ ছাড়া সামরিক বাহিনী ও সংশ্লিষ্ট বাহিনীগুলো অভ্যুত্থানের পর প্রথম দুই বছরে ১৭ হাজার ৫৭২ জনকে গ্রেপ্তার করেছে।