ঢাকা, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪  |  Friday, 19 April 2024  |  এখন সময়:

Advertise@01680 34 27 34

তিতাসের ‘গ্যাস থেকে’ ভবনে বিস্ফোরণ


অনলাইন ডেস্কঃ

প্রকাশিত:   ০২:০৩ এএম, শুক্রবার, ১০ মার্চ ২০২৩   আপডেট:   ০২:০৩ এএম, শুক্রবার, ১০ মার্চ ২০২৩  
তিতাসের ‘গ্যাস থেকে’ ভবনে বিস্ফোরণ
তিতাসের ‘গ্যাস থেকে’ ভবনে বিস্ফোরণ

তিতাসের পরিত্যক্ত লাইনের ছিদ্র থেকে বের হওয়া গ্যাস জমে পুরান ঢাকার সিদ্দিকবাজারে ভবনের বেজমেন্টে ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশের কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিটের বোমা নিষ্ক্রিয়করণ দলের প্রাথমিক অনুসন্ধানে এ তথ্য উঠে এসেছে। 

সিটিটিসির বোমা নিষ্ক্রিয়করণ দল বলছে, সিদ্দিকবাজারের কুইন স্যানিটারি মার্কেট হিসেবে পরিচিত সাততলা ওই ভবনের বেজমেন্টে তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের একটি পরিত্যক্ত লাইনের অস্তিত্ব তারা পেয়েছে। বেজমেন্টে একসময় রান্নাঘর ছিল, আর নিচতলায় ছিল খাবারের হোটেল। এই রান্নাঘরে তিতাস গ্যাসের বাণিজ্যিক লাইন ছিল। ২০০১ সালে গ্যাস–সংযোগের লাইনটি রাইজার (গ্যাস সরবরাহের সংযোগস্থল) থেকে বিচ্ছিন্ন করা হয়। তবে সংযোগ লাইন অপসারণ করা হয়নি। যে কারণে সেটিতে গ্যাসের সরবরাহ ছিল। ওই লাইনের ছিদ্র থেকে বেজমেন্টের শীতাতপনিয়ন্ত্রিত কোনো একটি কক্ষের বদ্ধ কুটুরিতে গ্যাস জমে ছিল। সেখান থেকেই ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে বলে সিটিটিসি মনে করছে।

তবে তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. হারুনুর রশিদ মোল্লাহ বাংলারসময় ডটকমকে বলেন, বেজমেন্টে বৈধভাবে গ্যাস–সংযোগ থাকার কোনো সুযোগ নেই। সিদ্দিকবাজারের ভবনটিতে এমন কোনো সংযোগ থাকার কথা তাঁর জানা নেই। তিতাসের একটি দল সেখানে কাজ করছে। এমন কিছু হলে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।

যদিও বিস্ফোরণস্থল পরিদর্শন শেষে সিটিটিসির পর্যবেক্ষণ হচ্ছে, সাততলা ভবনের পেছনের একটি রাইজার থেকে বেজমেন্টের দিকে ২০ মিটারের মতো একটি লাইন রয়েছে। সিটিটিসির বোমা নিষ্ক্রিয়করণ দলের অতিরিক্ত উপকমিশনার (এডিসি) রহমত উল্লাহ চৌধুরী বাংলারসময় ডটকমকে জানান, বেজমেন্ট শীতাতপনিয়ন্ত্রিত হওয়ায় এর কক্ষগুলো ছিল আবদ্ধ। বেজমেন্টে পাঁচটি দোকান ছিল। দোকানগুলো শীতাতপনিয়ন্ত্রিত হওয়ায় সেখানে বাইরে থেকে বাতাস চলাচলের কোনো ব্যবস্থা ছিল না। ফলে সেখানে গ্যাস জমা হওয়ার পর কোনোভাবে স্পার্ক (আগুনের স্ফুলিঙ্গ) হওয়ার পরই ভয়াবহ বিস্ফোরণের এ ঘটনা ঘটে।

অন্যদিকে ফায়ার সার্ভিস বলছে, বিস্ফোরণের পর ঘটনাস্থলে গিয়ে তাদের উদ্ধারকারী দলের কর্মীরা গ্যাসের গন্ধ পান। দ্রুত তাঁরা তিতাস কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। পরে তিতাসের কর্মীরা এসে ভবনের গ্যাসের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেন।

বিস্ফোরণের ঘটনায় ফায়ার সার্ভিস গঠিত তদন্ত কমিটির সদস্য ও এই সংস্থার ঢাকা বিভাগীয় উপপরিচালক দিনমনি শর্মা বাংলারসময় ডটকমকে বলেন, তিতাসের দুজন কর্মকর্তা এসে যে সংযোগটি বন্ধ করেছেন, সেটি সাত দিন আগে মেরামত করা হয়েছিল। ঘটনার পরদিন (বুধবার) তিতাসের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে এসে বলেছিলেন, গ্যাসের গন্ধ পাওয়া যায়নি। কিন্তু গ্যাসের সংযোগ বন্ধ করে দেওয়ার এক দিন পর সেখানে গ্যাসের গন্ধ না পাওয়াই স্বাভাবিক।

গত মঙ্গলবার বিকেল পুরান ঢাকার সিদ্দিকবাজারের একটি সাততলা ভবনের বেজমেন্ট থেকে দ্বিতীয় তলা পর্যন্ত ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। বিস্ফোরণে গতকাল বৃহস্পতিবার রাত ১১টা পর্যন্ত ২৩ জন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে গতকাল দুপুরে ভবনের বেজমেন্টের দক্ষিণ পাশের সিঁড়ির নিচ থেকে মেহেদী হাসান নামে এক ব্যবসায়ীর লাশ উদ্ধার করেছেন ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা। রাত সাড়ে আটটার দিকে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান আরাফাত ইয়াসিন নামের আরও একজন। তিনি ভবনে থাকা একটি স্যানিটারি দোকানের কর্মী ছিলেন। বিস্ফোরণে আহত হয়েছেন শতাধিক ব্যক্তি। এর মধ্যে এখনো চিকিৎসাধীন আছেন ২৩ জন।

বিস্ফোরণের ঘটনায় সাততলা ভবনটির মালিক ওয়াহিদুর রহমান ও মতিউর রহমান এবং ভবনের একটি দোকানের মালিক আবদুল মোতালিব হোসেনকে গত বুধবার আটক করা হয়েছিল। আর গতকাল তাঁদের ফৌজদারি কার্যবিধির ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে দুই দিনের জন্য রিমান্ডে নিয়েছে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।

এদিকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন ‘ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ’ লেখা ব্যানার টানিয়ে রেখেছে। গতকাল সকালে ক্ষতিগ্রস্ত ভবনে তৃতীয় দিনের মতো উদ্ধার কার্যক্রম শুরু করেন ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা। মূলত সকালের দিকে বেজমেন্টে জমে থাকা পানি অপসারণের কাজ চলে। এ পর্যন্ত কোনো ভারী যন্ত্র ব্যবহার না করেই উদ্ধার অভিযান চালাচ্ছে ফায়ার সার্ভিস।

গতকাল দুপুরের দিকে রাজউকের কর্মকর্তারা ভবনটি পরিদর্শন করে জানান, এ ভবনে ২৪টি কলাম আছে, এর মধ্যে ৯টি কলাম ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। অন্যান্য কলামেও প্রভাবে পড়েছে। ওপরের তলাগুলো যাতে ধসে না পড়ে, সে জন্য রাজউকের তত্ত্বাবধানে গত রাত নয়টা থেকে ভবনের বেজমেন্ট থেকে প্রথম তলার ছাদ পর্যন্ত স্টিলের পাইপ বসানোর কাজ শুরু হয়। প্রতিটি পাইপের ব্যাস ৬ ইঞ্চি এবং উচ্চতা ২০ ফুট। এর আগে সন্ধ্যা সাতটার দিকে দুটি ভ্যানে করে নয়টি পাইপ সেখানে নিয়ে আসেন রাজউকের কর্মকর্তারা। সংস্থাটির এক কর্মকর্তা বলেন, ‘পাইপগুলো দিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত কলামে সাপোর্ট (ভার বহনের জন্য) দেওয়া হচ্ছে। যাতে ভবনটি ভেঙে না পড়ে।’

গত মঙ্গলবার বিস্ফোরণের পরের দিন বুধবার পর্যন্ত উদ্ধার অভিযান শেষ করতে পারেননি ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা। ঝুঁকিপূর্ণ ভবনটির বেজমেন্টে উদ্ধার অভিযান চালাতে প্রয়োজন শোরিং (ঠেক দেওয়ার) নামের বিশেষ যন্ত্রের, যা ফায়ার সার্ভিসের কাছে নেই।

সায়েন্স ল্যাবরেটরির বিস্ফোরণে মামলা

সিদ্দিকবাজারে বিস্ফোরণের ৫৪ ঘণ্টা আগে গত রোববার বেলা পৌনে ১১টার দিকে ঢাকার সায়েন্স ল্যাবরেটরি এলাকার শিরিন ভবনের তৃতীয় তলায় বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। বিস্ফোরণে মারা যান তিনজন। আহত হন অন্তত ১৫ জন। বিস্ফোরণের কারণ হিসেবে বলা হচ্ছে, তিতাস গ্যাস–সংযোগের লিকেজ (ছিদ্র) থেকে তৃতীয় তলার আবদ্ধ কোনো কুঠুরিতে গ্যাস জমে ছিল।

তবে সেদিন বিস্ফোরণের পর তিতাস গ্যাসের কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শনে এসে বলেছিলেন, ভবনটির নিচতলায় গ্যাসের একটি সংযোগ রয়েছে। দোতলা ও তৃতীয় তলায় কোনো গ্যাস–সংযোগ নেই।

অবশ্য নিউমার্কেট থানার ওসি শফিকুল গণি গতকাল বাংলারসময় ডটকমকে বলেন, ভবনের তিনতলায় তিতাস গ্যাস–সংযোগের পাইপ পাওয়া গেছে। সেই সংযোগ লিকেজ থেকে গ্যাস জমে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে কি না, সেটি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।

সায়েন্স ল্যাব এলাকার ভবনে বিস্ফোরণের ঘটনায় গত বুধবার বিস্ফোরকদ্রব্য আইনে পুলিশ বাদী হয়ে মামলা হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেন পুলিশের রমনা বিভাগের উপ–কমিশনার শহীদুল্লাহ।

পুলিশ বলছে, বিস্ফোরণের ঘটনায় মালিকের নাকি ভাড়াটিয়াদের অবহেলা রয়েছে, সেটা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।

তিতাসের গাফিলতিতে আরও বিস্ফোরণ

২০২১ সালের ২৭ জুন ঢাকার মগবাজারে একটি চারতলা ভবনের নিচতলায় ভয়াবহ বিস্ফোরণে ১২ জনের মৃত্যু হয়েছিল। ওই ঘটনায় অবহেলাজনিত মৃত্যুর অভিযোগে করা মামলার তদন্ত করছে সিটিটিসি। তদন্তসংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা গতকাল বাংলারসময় ডটকমকে বলেন, মগবাজার ও সিদ্দিকবাজারের ঘটনায় তিতাসের গাফলতি একই ধরনের। দুটি ঘটনাতেই তিতাসের পরিত্যক্ত সংযোগ থেকে শীতাতপনিয়ন্ত্রিত বদ্ধ কক্ষে গ্যাস জমা হয়েছে। দুটি ঘটনার ক্ষেত্রেই একইভাবে হঠাৎ স্পার্ক (আগুনের স্ফুলিঙ্গ) থেকে বিস্ফোরণ এবং বিস্ফোরণের পর ভবনে একই ধরনের প্রতিক্রিয়া হয়েছে। ক্ষয়ক্ষতির ধরনও একই। দুটি ঘটনাতেই বিকট শব্দে বিস্ফোরণের পর ভবনের সামনের অংশ বিধ্বস্ত হয়ে মূল সড়কে এসে পড়েছে। এই কারণে এ দুটি ঘটনায় ক্ষয়ক্ষতিও অনেক বেশি হয়েছে।

মগবাজারে বিস্ফোরণের ঘটনায় করা মামলার তদন্তসংশ্লিষ্ট সিটিটিসির একটি সূত্র জানায়, এই বিস্ফোরণে তিতাসের পাশাপাশি রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের গাফিলতি পাওয়া গেছে। ওই ভবন ছিল ৬০ বছরের পুরোনো আবাসিক ভবন। অথচ সেখানে চলছিল বাণিজ্যিক কার্যক্রম। বিস্ফোরণের ঘটনায় তিতাস ও রাজউকের যেসব কর্মকর্তা ও কর্মচারীর গাফিলতি পাওয়া গেছে, তাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে।

এর আগে ২০২০ সালের ৪ সেপ্টেম্বর নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে তল্লা এলাকায় শীতাতপনিয়ন্ত্রিত একটি মসজিদের ভেতরে গ্যাস জমে বিস্ফোরণ থেকে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এতে ৩৪ জন পুড়ে মারা যান। এ ঘটনায় তিতাসের আট কর্মকর্তা–কর্মচারীর গাফিলতির তথ্য উঠে আসে পুলিশের তদন্তে।

তিতাস গ্যাস কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. হারুনুর রশিদ মোল্লাহ বাংলারসময় ডটকমকে  বলেন, আগে অবহেলার ঘটনা থাকতে পারে। এখন সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার সময় গ্যাসের সরবরাহ বন্ধ করার বিষয়টি জোর নজরদারির মাধ্যমে নিশ্চিত করা হয়। আর ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জের পুরোনো পাইপলাইন পাল্টে নতুন পাইপলাইন বসানোর জন্য উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এ জন্য একটি প্রকল্প অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে।

পুরোনো লাইনে গ্যাস লিকেজের ঝুঁকি

২০২০ সালের ৪ সেপ্টেম্বর নারায়ণগঞ্জে গ্যাস লিকেজ (ছিদ্র) থেকে অগ্নিকাণ্ডে মারা যান ৩৪ জন। এরপর তিতাসের বিতরণ এলাকায় গ্যাস বিতরণ লাইনে ১ হাজার ৬২২টি লিকেজ শনাক্ত করার কথা জানায় তিতাস। মেরামতও করা হয় ওই লিকেজ। কিন্তু এরপরও নিয়মিত লিকেজের খোঁজ আসছে তিতাসে। গ্যাস বিতরণ লাইনে লিকেজের কারণে একদিকে গ্যাসের অপচয় হচ্ছে, অন্যদিকে রয়েছে বড় দুর্ঘটনার ঝুঁকি।

ঢাকার তিতাস, সিলেটের জালালাবাদ ও চট্টগ্রামের কর্ণফুলী গ্যাস বিতরণ কোম্পানির বেশির ভাগ পাইপলাইনের বয়স ৩০ বছরের বেশি। গ্রাহকের অভিযোগের ভিত্তিতে লিকেজের খোঁজ পায় কোম্পানিগুলো। তবে ২০২১ সালে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে লিকেজ শনাক্ত করার কাজ শুরু হয় চট্টগ্রামে। প্রাথমিকভাবে প্রায় ৫০ কিলোমিটার পাইপলাইন অনুসন্ধান করেই ৮৭টি লিকেজ পায় তারা। এর মধ্যে ৪৯টি লিকেজ দ্রুত মেরামত করা না হলে দুর্ঘটনার ঝুঁকি ছিল।

তিতাসের কর্মকর্তারা বলেন, বাসায় গ্যাস সরবরাহের জন্য পাইপলাইনের গোড়ায় একটি সংযোগ অংশ থাকে, যা রাইজার নামে পরিচিত। কোথাও কোথাও এসব রাইজার থাকে ঘরের মধ্যে। কোথাও থাকে স্টোর রুম বা বদ্ধ কোনো রুমের ভেতরে। সেখানে লিকেজ থেকে গ্যাস জমে অগ্নিকাণ্ডের মতো বড় দুর্ঘটনায় মানুষ বা সম্পদের বড় ক্ষতি হতে পারে। আবার নানা কারণে গ্যাসের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হলেও কোনো কোনো ক্ষেত্রে রাইজার থেকে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করা হয় না। এতে করে পরিত্যক্ত লাইনে গ্যাস জমে থাকে। ওই পাইপলাইনে কোনো লিকেজ হলেও গ্যাস বের হয়ে জমতে থাকে।

তিতাসের কেন্দ্রীয় জরুরি গ্যাস নিয়ন্ত্রণকেন্দ্রে ঢাকা ও আশপাশের এলাকা থেকে প্রতি মাসে গ্রাহকেরা ৫০০ থেকে ৬০০ অভিযোগ করেন। এর মধ্যে পাঁচ শতাধিক গ্যাস লিকেজ–সংক্রান্ত। সরকারের চলমান উন্নয়নকাজের জন্যও বিভিন্ন এলাকায় গ্যাস বিতরণ লাইনে লিকেজ হচ্ছে। এতে দুর্ঘটনার ঘটনাও বাড়ছে। ২০২০-২১ অর্থবছরে অগ্নিদুর্ঘটনা ২৮১টি এবং ২০২১-২২ অর্থবছরে অগ্নিদুর্ঘটনা বেড়ে হয়েছে ৩১১টি।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, তিতাসের অবহেলার কারণে লাইনের লিকেজ থেকে একর পর এক বিস্ফোরণ ঘটছে। তিতাসের কর্মকর্তাদের গাফিলতির কারণে আড়াই বছরের ব্যবধানে নারায়ণগঞ্জের মসজিদে, ঢাকার মগবাজার, সায়েন্স ল্যাবরেটরি ও সিদ্দিকবাজারের ভবনে ভয়াবহ বিস্ফোরণে ব্যাপক প্রাণহানি হয়েছে। অথচ বারবার তিতাস দায় এড়িয়ে যাচ্ছে। গাফিলতিতে দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিলে এ ধরনের ঘটনা ঘটতেই থাকবে।

ফায়ার সার্ভিসের সাবেক পরিচালক (অপারেশনস) অবসরপ্রাপ্ত মেজর শাকিল নেওয়াজ বাংলারসময় ডটকমকে বলেন, আবাসিক–বাণিজ্যিক ভবন, গ্যাস–বিদ্যুৎ সংযোগের বিষয়ে তদারকির দায়িত্বে থাকা সরকারি সংস্থাগুলো ঠিকমতো কাজ করেছে কি না, সেটি আগে খুঁজে বের করতে হবে। তদারকির কাজে যদি কারও গাফিলতি থাকে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে।

জাতীয় থেকে আরও পড়ুন

রাজধানী ঢাকা বিস্ফোরণ গুলিস্তানে বিস্ফোরণ তিতাস গ্যাস

আপনার মন্তব্য লিখুন...