ঢাকা, শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪  |  Saturday, 20 April 2024  |  এখন সময়:

Advertise@01680 34 27 34

ছাত্রলীগের নেতার বিচার চাইলেন কর্মকর্তা–কর্মচারীরা


অনলাইন ডেস্কঃ

প্রকাশিত:   ০৪:০৪ পিএম, বৃহস্পতিবার, ৬ এপ্রিল ২০২৩   আপডেট:   ০৪:০৪ পিএম, বৃহস্পতিবার, ৬ এপ্রিল ২০২৩  
ছাত্রলীগের নেতার বিচার চাইলেন কর্মকর্তা–কর্মচারীরা
ছাত্রলীগের নেতার বিচার চাইলেন কর্মকর্তা–কর্মচারীরা

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় স্টোর (গুদামঘর) থেকে পুরোনো মালামাল দরপত্র ছাড়াই নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা ও কর্মকর্তাকে হেনস্তা করার অভিযোগ উঠেছে ছাত্রলীগের তিন নেতার বিরুদ্ধে।

গতকাল বুধবার বেলা তিনটার দিকে এ ঘটনা ঘটে। পরে আজ বৃহস্পতিবার ওই ঘটনার বিচার চেয়ে উপাচার্য বরাবর চিঠি দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা সমিতি। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বিচার না করা হলে আগামী রোববার থেকে কর্মবিরতিতে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন সমিতির নেতারা।

যে তিন নেতার বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে তাঁরা হলেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সহসভাপতি মোফাজ্জল হায়দার ইবনে হোসাইন, নজরুল ইসলাম ও সাদেক হোসেন। তাঁদের মধ্যে মোফাজ্জল ছাত্রলীগের উপপক্ষ সিক্সটি নাইনের অনুসারী। তিনি ‘টাইগার মোফা’ নামে ক্যাম্পাসে পরিচিত। আর নজরুল বিজয় উপপক্ষ ও সাদেক ভার্সিটি এক্সপ্রেস উপপক্ষের অনুসারী হিসেবে পরিচিত।

উপাচার্য বরাবর দেওয়া চিঠিতে কর্মকর্তা সমিতির নেতারা উল্লেখ করেন, গত ২৭ ফেব্রুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের বোর্ড অব রেসিডেন্ট হেলথ অ্যান্ড ডিসিপ্লিনারি কমিটির নেওয়া সিদ্ধান্ত অনুযায়ী গত ১৫ মার্চের মধ্যে ছাত্রত্ব নেই, এমন ব্যক্তিদের বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হল ও ক্যাম্পাস ত্যাগের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। ওই সময়ের পর ছাত্রত্ব নেই এমন কাউকে ক্যাম্পাসে পাওয়া গেলে  আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছিল প্রশাসন।

চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, অছাত্রদের বিষয়ে এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন না হওয়ায় গতকাল বেলা দুইটার পর বিভিন্ন বিতর্কিত ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ত নজরুল ইসলাম, মোফাজ্জল হায়দার (বহিষ্কৃত শিক্ষার্থী) ও সাদেক হোসেনের নেতৃত্বে কিছু চিহ্নিত অছাত্র কেন্দ্রীয় স্টোরে বড় ধরনের অঘটন ও বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্পদ বিনষ্ট করার উদ্দেশ্যে হামলা চালিয়েছেন।
 
এই নেতাদের মধ্যে নজরুল রেজিস্ট্রার দপ্তরের এস্টেট শাখা, প্রকৌশল দপ্তর ও পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের দপ্তরে গিয়ে জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের হুমকি দিয়েছেন বলেও অভিযোগ করা হয় চিঠিতে।

চিঠির বিষয়ে জানতে চাইলে কেন্দ্রীয় স্টোর শাখার ডেপুটি রেজিস্ট্রার ও কর্মকর্তা সমিতির সভাপতি রশীদুল হায়দার বলেন, এ শাখায় পুরোনো কম্পিউটার, ফটোকপি মেশিনসহ নানান যন্ত্রপাতি ও পুরোনো কাগজপত্র রয়েছে। এগুলোর মূল্য প্রায় ৫০ হাজার টাকা। এসব মালামাল আর কাজে আসবে না। নিয়ম অনুযায়ী এসব বিক্রির জন্য বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দরপত্র আহ্বান করা হয়। কিন্তু এ তিন নেতা গতকাল এসে এসব মালামাল নিয়ে যেতে চেয়েছিলেন।

প্রক্রিয়া না মেনে এসব মালামাল দিয়ে দিলে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন ও সরকারের অডিট শাখা এর জবাব চাইবে জানিয়ে রশীদুল হায়দার বলেন, তাই তাঁরা মালামালগুলো দেননি। এতে এই তিন নেতা অশালীন ভাষায় গালাগাল করেছেন। কর্মকর্তা–কর্মচারীদের হুমকি দিয়েছেন। তাঁরা এ ঘটনার বিচার চান। বিচার না হলে রোববার থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মবিরতি পালন করবেন।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে সহসভাপতি সাদেক হোসেন ও নজরুল ইসলামের মুঠোফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তাঁরা কল রিসিভ করেননি। আর মোফাজ্জল হায়দারের মুঠোফোনে কল করলে তিনি বৈঠকে ব্যস্ত আছেন বলে তা কেটে দেন। পরে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।

এই নেতাদের মধ্যে মোফাজ্জল আগেও নানা বিতর্কিত ঘটনায় আলোচনায় এসেছিলেন। ২০১৫ সালের ২ নভেম্বর ছাত্রলীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষের সময় তোলা ছবি পরের দিন পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। এতে দেখা যায়, শাহজালাল হলের তৃতীয় তলার বারান্দায় রামদায় শাণ দিচ্ছেন ছাত্রলীগের দুই কর্মী। তাঁদের একজন ছিলেন মোফাজ্জল। ছবিটি প্রকাশিত হওয়ার পর তাঁকে  সাময়িক বহিষ্কার করে কর্তৃপক্ষ। এতে পরীক্ষা দিতে না পেরে পরের বছর চারুকলা ইনস্টিটিউটের পরীক্ষার হলে তালা ঝুলিয়ে দেন তিনি। এ কারণে এক দিন পরীক্ষা স্থগিত রাখতে হয়েছিল।

বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের রাজনীতি দীর্ঘদিন ধরে দুটি পক্ষে বিভক্ত। একটি পক্ষ শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী ও আরেকটি পক্ষ সাবেক সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীনের অনুসারী হিসেবে নিজেদের পরিচয় দেন। দুটি পক্ষ আবার ১১টি উপপক্ষে বিভক্ত। ৯টি উপপক্ষ আ জ ম নাছির উদ্দীনের পক্ষের ও মহিবুল হাসান চৌধুরীর পক্ষের দুটি। বিবদমান সিক্সটি নাইন ও ভার্সিটি এক্সপ্রেসের নেতা–কর্মীরা নাছিরের আর বিজয় মহিবুলের অনুসারী।

জানতে চাইলে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন বাংলারসময়কে বলেন, বিষয়টি তিনি শুনেছেন। ঘটনার সত্যতা যাচাই করে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। নেতাদের বিরুদ্ধে আনা এ অভিযোগ যদি প্রমাণিত হয়, তাহলে তাঁরা সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেবেন।

রাজনীতি থেকে আরও পড়ুন

বাংলাদেশ রাজনীতি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় চট্টগ্রাম বিভাগ ছাত্রলীগ

আপনার মন্তব্য লিখুন...