Oops! It appears that you have disabled your Javascript. In order for you to see this page as it is meant to appear, we ask that you please re-enable your Javascript!
ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৩০ মার্চ, ২০২৩  |  Thursday, 30 March 2023  |  এখন সময়:

Advertise@01680 34 27 34

আজ বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন - বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতা সংগ্রামের একক নেতা হন যেভাবে


অনলাইন ডেস্কঃ

প্রকাশিত:   ১০:০৩ এএম, শুক্রবার, ১৭ মার্চ ২০২৩   আপডেট:   ১০:০৩ এএম, শুক্রবার, ১৭ মার্চ ২০২৩  
আজ বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন - বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতা সংগ্রামের একক নেতা হন যেভাবে
আজ বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন - বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতা সংগ্রামের একক নেতা হন যেভাবে

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আজকের এই দিনে ১০৩ বছর আগে ১৯২০ সালে জন্মগ্রহণ করেছিলেন গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায়। ১৭ মার্চ তাঁর জন্মদিনটিকে জাতীয় শিশু দিবস হিসেবে উদ্‌যাপন করা হয়ে থাকে।

ধর্মনিরপেক্ষতা ও অসাম্প্রদায়িক রাজনীতিকে আদর্শিক ভিত্তি করে বাংলাদেশের স্বাধীনতাসংগ্রামের অবিসংবাদিত নেতা হয়ে উঠেছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব। বিভিন্ন সময় এই অঞ্চলের স্বাধিকার আন্দোলনের দাবি উঠেছিল। কিন্তু তাঁর ছয় দফাকে ভিত্তি করে জাতীয়তাবাদের চেতনা ও স্বাধিকারের দাবি সামনে আসে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা মনে করেন, ছয় দফা দেওয়ার পর বঙ্গবন্ধু মানুষকে দ্রুত বাঙালি জাতীয়তাবাদী চেতনার পক্ষে সংগঠিত করতে সক্ষম হন এবং ধাপে ধাপে এগোতে থাকেন স্বাধীনতার চূড়ান্ত লড়াইয়ের পথে। তিনি দলীয় সীমানা পেরিয়ে হয়ে ওঠেন স্বাধীনতাসংগ্রামের একক নেতা।

ছাত্রজীবনে শেখ মুজিবের রাজনীতির শুরু মুসলিম লীগের রাজনীতিতে যুক্ত হওয়ার মধ্য দিয়ে। পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার আন্দোলনেও তাঁর সমর্থন ছিল। সেই রাজনীতি থেকে বেরিয়ে তিনি ধর্মনিরপেক্ষতা ও অসাম্প্রদায়িক রাজনীতির নেতা হয়ে ওঠেন।

ধর্মনিরপেক্ষতার চেতনায় স্বাধীনতাসংগ্রামের অন্যতম একজন সংগঠক ছিলেন পঙ্কজ ভট্টাচার্য। তিনি এখন ঐক্য ন্যাপের নেতা। তিনি বাংলারসময়কে বলেছেন, এই অঞ্চলের মানুষের মাঝে ঐতিহ্যগতভাবেই অসাম্প্রদায়িক সংস্কৃতি ছিল। এর সঙ্গে ছিল ভাষাগত সংস্কৃতি। এই দুটি বিষয়ের প্রভাব পড়েছিল শেখ মুজিবের জীবনে।

এই প্রবীণ নেতা উল্লেখ করেন, পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার পর এই অঞ্চলের মানুষ অর্থনীতি, ভাষাসহ নিজেদের জীবনের সঙ্গে জড়িত সব সংস্কৃতি এবং রাজনৈতিক দিক থেকেও বৈষম্যের শিকার হতে থাকে। ফলে পাকিস্তান নিয়ে সাধারণ মানুষের মোহ ভাঙতে শুরু করে।

সেই বাস্তবতা দ্রুত অনুভব করতে পারেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। আর এর ভিত্তিতেই তিনি নিজেকে অসাম্প্রদায়িক রাজনীতির নেতা হিসেবে গড়ে তুলেছিলেন বলে মনে করেন পঙ্কজ ভট্টাচার্য।

আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ নেতা শেখ ফজলুল করিম সেলিম মনে করেন, পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার অল্প সময়ের মধ্যেই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব ধর্মনিরপেক্ষতা ও অসাম্প্রদায়িক চেতনা থেকে বাংলা ভাষা আন্দোলন সংগঠিত করতে গিয়ে বারবার জেলে গিয়েছিলেন।

বাংলারসময় এর সঙ্গে আলাপকালে শেখ ফজলুল করিম সেলিম বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু যখন দেখলেন পশ্চিম পাকিস্তানিরা এখানে সাম্প্রদায়িকতার বীজ বপন করছে, তখন তিনি ধর্মনিরপেক্ষতার পক্ষে জনমত তৈরি করতে জোরেশোরে মাঠে নামেন।’ এমনকি ১৯৫৫ সালে বঙ্গবন্ধুর প্রস্তাবের কারণে আওয়ামী মুসলিম লীগ থেকে মুসলিম শব্দ বাদ দিতে হয়েছিল বলে উল্লেখ করেন শেখ ফজলুল করিম।

শেখ মুজিবের রাজনৈতিক জীবন নিয়ে গবেষণা করেছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক খুরশিদা বেগম। তিনি মনে করেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রাজনীতিতে যাত্রা শুরু করেছিলেন এ কে ফজলুল হক ও শহীদ সোহরাওয়ার্দীর অনুপ্রেরণায়। এই দুই নেতাও সে সময় পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার আন্দোলন এবং মুসলিম লীগের রাজনীতিতে সম্পৃক্ত ছিলেন। কিশোর বয়সের বঙ্গবন্ধু, বিশেষ করে শহীদ সোহরাওয়ার্দীর অনুপ্রেরণায় এবং একটা সময়ের প্রভাবে মুসলিম লীগে সম্পৃক্ত হয়েছিলেন।

খুরশিদা বেগম বাংলারসময়কে বলেন, মুসলিম লীগের রাজনীতি করলেও শহীদ সোহরাওয়ার্দী এবং এ কে ফজলুল হক অসাম্প্রদায়িক চেতনায় বিশ্বাসী ছিলেন। ফলে শহীদ সোহরাওয়ার্দীর সান্নিধ্যে থেকে শেখ মুজিবও রাজনীতির শুরু থেকেই অসাম্প্রদায়িক চেতনায় পরিপক্ব হয়ে উঠছিলেন।

স্বাধীনতাসংগ্রামের একক নেতা

বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ঠ ছিলেন আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ নেতা তোফায়েল আহমেদ। তিনি বাংলারসময়কে বলেন, ভাষা আন্দোলন, ১৯৫৪ সালে যুক্তফ্রন্টের নির্বাচন, ’৬২–এর শিক্ষা আন্দোলন, এরপর ’৬৬–তে এসে ছয় দফা দিয়ে বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতা আন্দোলনের অবিসংবাদিত নেতা হয়ে ওঠেন।

বিশ্লেষকদের অনেকে মনে করেন, শেখ মুজিবকে স্বাধীনতাসংগ্রামের একক নেতা বানিয়েছে ছয় দফা। এর ব্যাখ্যায় তাঁদের বক্তব্য হচ্ছে, ছয় দফা দেওয়ার পর বঙ্গবন্ধু সারা দেশ ঘুরে মানুষকে জাতীয়তাবাদী চেতনায় স্বাধীনতার আন্দোলনে উদ্বুদ্ধ করতে সক্ষম হন। এর ভিত্তিতে তিনি ’৭০–এর নির্বাচনে বিপুল ভোটে জয়লাভ করে গোটা জাতিকে স্বাধীনতার চূড়ান্ত পথে নিয়ে যেতে পারেন।

তবে ছয় দফা হঠাৎ করে আসেনি। আওয়ামী লীগের উত্থানপর্ব নিয়ে বই লিখেছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষক মহিউদ্দিন আহমদ। তিনি তাতে লিখেছেন, ‘ছয় দফা হঠাৎ করে আসমান থেকে আসেনি। দীর্ঘদিন ধরে আঞ্চলিক স্বায়ত্তশাসনের দাবি ও ধারাবাহিক আন্দোলনের মধ্য দিয়ে এর তাত্ত্বিক ভিত্তি তৈরি হয়েছিল।’

ভারত–পাকিস্তান যুদ্ধের পর এই দুই দেশের মধ্যে তাসখন্দে একটি চুক্তি সই হয়েছিল তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়নের মধ্যস্থতায়। সেই চুক্তি নিয়ে আলোচনা করতে পাকিস্তানের বিরোধী দলের রাজনীতিকদের একটি সম্মেলন ডাকা হয়েছিল ১৯৬৬ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি।

সেই সম্মেলনের বিষয় নির্ধারণী কমিটির সভায় ছয় দফা পেশ করেছিলেন শেখ মুজিবুর রহমান ।

বিশ্লেষকেরা বলেন, লাহোরে সেই সম্মেলন থেকে ফেরার পর বঙ্গবন্ধুকে আর বেগ পেতে হয়নি। ধাপে ধাপে তিনি গোটা জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করে নিয়ে গেছেন স্বাধীনতার চূড়ান্ত পরিণতির দিকে। ৯ মাস রক্তক্ষয়ী সশস্ত্র মুক্তিসংগ্রামের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়।

রাজনীতি থেকে আরও পড়ুন

রাজনীতি স্বাধীনতা মুক্তিযুদ্ধ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান জাতীয় শিশু দিবস স্বাধীন বাংলাদেশ

আপনার মন্তব্য লিখুন...