ঢাকা, শুক্রবার, ৯ জুন, ২০২৩  |  Friday, 9 June 2023  |  এখন সময়:

Advertise@01680 34 27 34

‘হিরোইজম’ দেখাতে ‘ডট গ্যাং’ গড়ে তোলে কিশোরেরা


অনলাইন ডেস্কঃ

প্রকাশিত:   ০৭:০২ পিএম, মঙ্গলবার, ২৮ ফেব্রুয়ারী ২০২৩   আপডেট:   ০৭:০২ পিএম, মঙ্গলবার, ২৮ ফেব্রুয়ারী ২০২৩  
‘হিরোইজম’ দেখাতে ‘ডট গ্যাং’ গড়ে তোলে কিশোরেরা
‘হিরোইজম’ দেখাতে ‘ডট গ্যাং’ গড়ে তোলে কিশোরেরা

তারা সাতজন চট্টগ্রাম নগরের স্বনামধন্য স্কুলের দশম শ্রেণির ছাত্র। কারও বাবা চিকিৎসক, আবার কারও বাবা সরকারি কর্মকর্তা। সবার বয়স ১৬ বছর। এলাকায় আধিপত্য বিস্তার ও ‘হিরোইজম’ দেখাতে তারা দেড় বছর আগে ‘ডট গ্যাং’ নামে কিশোর গ্যাং গড়ে তোলে। তারা স্কুলপড়ুয়া শিক্ষার্থীদের উত্ত্যক্ত, ফুটপাতে চাঁদাবাজি, মারামারিসহ বিভিন্ন অপরাধ করে আসছিল। এ পর্যন্ত তারা ১৪ থেকে ১৫টি মারামারিতে অংশ নেয়। গ্যাংয়ের দলনেতা নিজের নামে ফেসবুক পেজ ও হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ খুলে হকিস্টিক, খেলনা পিস্তল নিয়ে চলাফেরার বিভিন্ন ভিডিও ছবি আপলোড করত।  

এলাকার অনেকের কাছ থেকে পাওয়া অভিযোগের ভিত্তিতে র‌্যাব গ্রুপটির কর্মকাণ্ডের ওপর নজরদারি করতে ফেসবুক পেজ ফলো করে আসছিল। পরে মঙ্গলবার নগরের চকবাজার এলাকা থেকে তাদের আটক করা হয়।  

এই কিশোরদের আটকের বিষয়ে র‍্যাব-৭ চট্টগ্রামের অধিনায়ক লে. কর্নেল মো. মাহবুব আলম আজ সন্ধ্যায় চান্দগাঁও ক্যাম্পে সংবাদ সম্মেলন করেন। সেখানে তিনি বলেন, গ্রেপ্তার সাতজন নগরের একটি কোচিং সেন্টারের ছাত্র ছিল। সেখানে তাদের পরিচয়। 

একসঙ্গে চলাফেরা ও আড্ডা। তাদের আড্ডাতে চকবাজার এলাকার আরেকটি কিশোর গ্যাং গ্রুপ বাধা দেয় এবং কয়েকজনকে মারধর করে। এর প্রতিশোধ নিতে তারা নিজেরা দেড় বছর আগে ‘ডট গ্যাং’ নামের আলাদা গ্যাং গড়ে তোলে। তাদের একজন দলনেতা নিজের নামে ফেসবুক পেজ ও হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ তৈরি করে। সেখানে তাদের কার্যক্রমের বিভিন্ন ভিডিও ও ছবি দিত। যাতে তাদের অনুসারী বাড়ে। দলে সদস্যসংখ্যা বাড়ে। বর্তমানে তাদের গ্রুপে ৪০ জন সদস্য রয়েছে। সবাই তাদের বয়সী।

র‍্যাব অধিনায়ক আরও বলেন, নগরের চকবাজার থেকে গণি বেকারি মোড় পর্যন্ত এলাকা নিয়ন্ত্রণ করে কিশোর গ্যাংয়ের এই গ্রুপটি। তারা স্কুলপড়ুয়া শিক্ষার্থীদের উত্ত্যক্ত, ফুটপাতে চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন অপরাধ কর্মকাণ্ড করে আসছে। এক বড় ভাই তাদের আর্থিকভাবে সাহায্য করে আসছে। এই কিশোরদের রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা পাওয়া না গেলেও জায়গা দখল, এলাকায় আধিপত্য বিস্তারে কথিত বড় ভাই তাদের ব্যবহার করত। সেই বড় ভাইকে ধরার চেষ্টা চলছে। বয়স কম কিংবা স্কুলপড়ুয়া হওয়ায় সাধারণত এসব কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যদের বিরুদ্ধে মামলা হয় না। এ সুযোগকে কাজে লাগায় কথিত বড় ভাইয়েরা।

পারিবারিকভাবে নৈতিক শিক্ষা আরও জোরদার এবং সন্তান কোথায় যায়, কার সঙ্গে মেশে—অভিভাবকদের আরও সচেতন হওয়ার জন্য আহ্বান জানান র‍্যাব অধিনায়ক লে. কর্নেল মো. মাহবুব আলম।

এক প্রশ্নের জবাবে র‍্যাব অধিনায়ক সাংবাদিকদের বলেন, নগরের ১৬ থানায় অর্ধশতাধিক কিশোর গ্যাং গ্রুপ রয়েছে। যারা দখলবাজি, চাঁদাবাজিসহ নানা অপরাধে জড়িয়ে পড়েছে। এক দশকে নগরের জামাল খান এলাকায় একাধিক কিশোর গ্যাংয়ের উত্থান হয়। তাদের অত্যাচারে রিকশাচালক, সিএনজিচালক, ফুটপাতের হকার ও স্কুলপড়ুয়া শিক্ষার্থীরা অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে।

র‍্যাব-৭ চট্টগ্রামের সহকারী পরিচালক (গণমাধ্যম) নুরুল আবছার বলেন, আটক কিশোরদের থানায় হস্তান্তর করা হচ্ছে। তাদের কাছ থেকে দুটি টিপ ছুরি ও একটি খেলনা পিস্তল উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় মামলা হবে।

অপরাধ থেকে আরও পড়ুন

অপরাধ কিশোর অপরাধ চট্টগ্রাম বিভাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন...