শেখ হাসিনার নেতৃত্বে নির্বাচনকালীন সরকার চায় সাম্যবাদী দল
অনলাইন ডেস্কঃ
প্রকাশিত: ১২:০১ এএম, বুধবার, ৫ জানুয়ারী ২০২২ আপডেট: ১২:০১ এএম, বুধবার, ৫ জানুয়ারী ২০২২
আইন ছাড়া গঠিত নির্বাচন কমিশন (ইসি) প্রশাসনের আজ্ঞাবহ প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয় বলে রাষ্ট্রপতির সংলাপে গিয়ে বলেছে বাংলাদেশের সাম্যবাদী দল। এ ছাড়া সার্চ কমিটির মাধ্যমে গঠিত ইসি জনগণের মধ্যে কোনো আবেদন সৃষ্টি করতে পারে না বলেও মনে করে দলটি। তবে এবার সাংবিধানিক সংস্থাগুলোর মাধ্যমে সার্চ কমিটি গঠনের পক্ষেই প্রস্তাব দিয়েছেন দলের নেতারা। একই সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে নির্বাচনকালীন সরকার চান দলটির নেতারা।
আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের আমন্ত্রণে সংলাপে অংশ নিয়ে পাঁচ দফা প্রস্তাব দিয়েছে সাম্যবাদী দল। দলের সাধারণ সম্পাদক দিলীপ বড়ুয়ার নেতৃত্বে ছয় সদস্যের প্রতিনিধিদল সংলাপে অংশ নেয়।
সন্ধ্যা সাতটায় ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সঙ্গে রাষ্ট্রপতির সংলাপের সময় নির্ধারিত ছিল। কিন্তু দলটি আগেই জানিয়েছে, তারা সংলাপে অংশ নেবে না। ৪ জানুয়ারি রাজধানীর পুরানা পল্টনের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে ইসলামী আন্দোলনের আমির সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম বলেছিলেন, জন-আকাঙ্ক্ষার বিপরীতে গিয়ে আবেদনহীন ও তাৎপর্যহীন সংলাপে অংশ নেওয়া তাঁরা সংগত মনে করেন না।
এদিকে সাম্যবাদী দল সংলাপে রাষ্ট্রপতির কাছে লিখিত পাঁচ দফা প্রস্তাব দিয়েছে। এর মধ্যে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে একটি নির্বাচনকালীন সরকার গঠন করাই শ্রেয় বলে মত দিয়েছে দলটি।
এর আগে খেলাফত আন্দোলন বাংলাদেশ সংলাপে অংশ নিয়ে নির্বাচনের সময় নির্দলীয় ও নিরপেক্ষ সরকার প্রতিষ্ঠার প্রস্তাব দিয়েছিল। অন্য কোনো দল নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে প্রস্তাব দেয়নি। সাম্যবাদী দল ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪-দলীয় জোটের সদস্য। জোটের নেতা হিসেবে দিলীপ বড়ুয়া ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকারের মন্ত্রী ছিলেন।
সাম্যবাদী দল বলেছে, রাষ্ট্রপতি নিজেই জাতীয় সংসদে ব্যবসায়ীদের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ার কথা বলেছেন। এই অবস্থা থেকে জাতিকে মুক্ত করতে একটি আইন করার প্রস্তাব দিয়েছেন দলটির নেতারা।
রাতে রাষ্ট্রপতির দপ্তর থেকে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, সাম্যবাদী দলের নেতাদের বঙ্গভবনে স্বাগত জানিয়ে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর সুচিন্তিত মতামত ও পরামর্শ সবার কাছে গ্রহণযোগ্য একটি নির্বাচন কমিশন গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য রাজনৈতিক শিষ্টাচার ও রাজনীতিতে সুস্থ পরিবেশ নিশ্চিত করা জরুরি। এ কাজ রাজনৈতিক দলগুলোকেই করতে হবে।
রাষ্ট্রপতির কার্যালয়ের সচিব সম্পদ বড়ুয়া, সামরিক সচিব মেজর জেনারেল এস এম সালাহ উদ্দিন ইসলাম, রাষ্ট্রপতির প্রেস সচিব মো. জয়নাল আবেদীন এবং সচিব (সংযুক্ত) মো. ওয়াহিদুল ইসলাম খান এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
ডাক পেল আরও নয়টি দল
আরও নয়টি রাজনৈতিক দলকে সংলাপের আমন্ত্রণ জানিয়েছে রাষ্ট্রপতির দপ্তর। এর মধ্যে আজ বুধবার সংলাপে অংশ নেবে জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ। আগামীকাল বৃহস্পতিবার গণফ্রন্ট ও লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টিকে (এলডিপি) আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। এরপর সংলাপ হবে ৯ জানুয়ারি। ওই দিন কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ ও বাংলাদেশ মুসলিম লীগের (বিএমএল) জন্য সংলাপের সময় নির্ধারণ করা হয়েছে। জাতীয় পার্টি (জেপি) এবং বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডি) সংলাপ হবে ১০ জানুয়ারি। ইসলামী ফ্রন্ট বাংলাদেশ এবং বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি (বাংলাদেশ ন্যাপ) সংলাপে যাবে ১১ জানুয়ারি।
দেশে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের সংখ্যা ৩৯। ২০১৬ সালে ইসি গঠনের আগে ৩১টি দলকে রাষ্ট্রপতি সংলাপের জন্য আমন্ত্রণ জানান। এবার মঙ্গলবার পর্যন্ত ১৬টি রাজনৈতিক দলকে সংলাপের জন্য আমন্ত্রণ জানিয়েছে রাষ্ট্রপতির দপ্তর। এর মধ্যে বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ), বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি) ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ সংলাপে অংশ নেয়নি। বিএনপিকে এখনো রাষ্ট্রপতির দপ্তর থেকে সংলাপের জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। তবে দলটির পক্ষ থেকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, তারা সংলাপে অংশ নেবে না। সংলাপে অংশ নেওয়া থেকে বিরত থাকা দলগুলো বলেছে, অতীতে একইভাবে সংলাপে অংশ নিয়ে কোনো ফল পায়নি তারা। এ জন্য এবার একই বিষয়ে সংলাপে অংশ নিতে তারা আগ্রহী নয়।