ঢাকা, শুক্রবার, ৯ জুন, ২০২৩  |  Friday, 9 June 2023  |  এখন সময়:

Advertise@01680 34 27 34

ব্যাংকের আবেদনে ২০০ টাকা ফি বসছে


অনলাইন ডেস্কঃ

প্রকাশিত:   ০৩:০৩ এএম, শনিবার, ২৩ মার্চ ২০১৯    
ব্যাংকের আবেদনে ২০০ টাকা ফি বসছে
ব্যাংকের আবেদনে ২০০ টাকা ফি বসছে

ব্যাংকার্স সিলেকশন কমিটির (বিএসসি) উদ্যোগে সরকারি ১৪টি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের নিয়োগের আবেদনে এতদিন একটি পয়সাও লাগত না প্রার্থীদের। ফলে অনেক প্রার্থী চাকরির আবেদন করলেও এমসিকিউ পরীক্ষায় অংশ নিতে আসত না। এ কারণে বিএসসি গঠনের সাড়ে তিন বছরের মাথায় এসে নিয়োগ পরীক্ষায় আবেদনের জন্য ২০০ টাকা করে ফি আরোপের বিষয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে। সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংকে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে এমন সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে জানিয়েছে বিএসসি সচিবালয় সূত্র। 

সূত্রমতে, আবেদনের ক্ষেত্রে ২০০ টাকা ফি নির্ধারণের সিদ্ধান্ত হলেও এই ফি কীভাবে আদায় করা হবে- সে বিষয়ে এখনও আলোচনা হয়নি। তবে অনলাইন বা মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে এই ফি আদায় করা যেতে পারে বলে প্রাথমিকভাবে আলোচনা হয়েছে। তবে ফি দিয়ে আবেদনের পর থেকে বিএসসি সচিবালয় পরীক্ষার আগের দিন পর্যন্ত প্রবেশপত্র ডাউনলোড করার সুযোগ রাখবে। বর্তমানে অনেক প্রার্থী আবেদন করলেও পরীক্ষায় অংশগ্রহণের হার কম। 

জানা গেছে, বিএসসির অধীনে সরকারি ব্যাংকগুলোতে চাকরির নিয়োগ পরীক্ষার খরচ বিএসসি ও সংশ্লিষ্ট ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান যৌথভাবে বহন করে। বিএসসি সচিবালয়ের কর্মকর্তারা বলছেন, এতদিন চাকরির আবেদনে কোনো ফি না থাকায় ঢালাওভাবে আবেদন করত প্রার্থীরা। তাদের মধ্যে অর্ধেকের মতো পরীক্ষায় অংশ নিত না, কিন্তু পরীক্ষার আয়োজন করতে হতো বড় করেই। এতে বিএসসি সচিবালয় এবং সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের অতিরিক্ত খরচ হত। 


বর্তমানে পরীক্ষা আয়োজনের অর্ধেক খরচ দেয় বিএসসি সচিবালয় এবং বাকি অর্ধেক খরচ দেয় সংশ্লিষ্ট ব্যাংক। রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক (রাকাব), পল্লী সঞ্চয় ব্যাংকসহ এমন কয়েকটি ব্যাংক আছে যাদের এই খরচও বহন করতে বেগ পেতে হয়। এক্ষেত্রে ২০০ টাকা ফি নির্ধারণ করলে অহেতুক আবেদন করা কমে যাবে এবং যাদের চাকরির দরকার তারাই আবেদন করবে। 

বিএসসি সচিবালয়ের কর্মকর্তারা জানান, এখন একসঙ্গে কয়েকটি ব্যাংকের নিয়োগ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। সেক্ষেত্রে ২০০ টাকা ফি দিয়েই একাধিক ব্যাংকের চাকরিতে আবেদনের সুযোগ থাকছে। এতে করে অহেতুক আবেদন যেমন কমে আসবে, তেমনি সংশ্লিষ্ট ব্যাংকগুলোর বাড়তি ব্যয় করতে হবে না। গত ৭ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ ব্যাংকে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে বিএসসির অধীনে পরিচালিত নিয়োগ পরীক্ষায় অংশগ্রহণে আবেদন ফি ২০০ টাকা নির্ধারণের বিষয়ে সর্বসম্মতিক্রমে সিদ্ধান্ত হয়। তবে কোনো কোনো সদস্য ৩০০ টাকা ফি আরোপের প্রস্তাব করেছিলেন। 

উল্লেখ্য, রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন সোনালী, জনতা, অগ্রণী, রূপালী, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক, রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক (রাকাব), বেসিক, বিডিবিএল, প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক, আনসার-ভিডিপি উন্নয়ন ব্যাংক, কর্মসংস্থান ব্যাংক, পল্লী সঞ্চয় ব্যাংক, বাংলাদেশ হাউজ বিল্ডিং ফাইন্যান্স করপোরেশন ও ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশের (আইসিবি) প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির কর্মকর্তা নিয়োগের জন্য ২০১৫ সালের সেপ্টেম্বরে বিএসসি গঠন করে অর্থ মন্ত্রণালয়ের তৎকালীন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ (বর্তমানে আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ)। এই কমিটিকে সহায়তা দেওয়ার লক্ষ্যে বাংলাদেশ ব্যাংকে বিএসসি সচিবালয় নামে আলাদা একটি বিভাগ করা হয়। 


জানা গেছে, বিএসসি গঠনের পর থেকে ২০১৮ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রায় ১১ হাজার ৭৭৮ পদে কর্মী নিয়োগের কাজ হাতে নিয়েছে এই কমিটি। এর মধ্যে পাঁচ হাজার ২৬০ কর্মী নিয়োগের জন্য প্যানেল তৈরি করে পাঠানো হয়েছে সংশ্লিষ্ট ব্যাংকগুলোতে। মৌখিক পরীক্ষা চলমান আছে তিন হাজার ৯৫৪ কর্মী নিয়োগের। লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষা শেষে এক হাজার ৫২০টি শূন্য পদে নিয়োগের প্যানেল তৈরির কাজ চলছে। মামলা চলমান থাকায় তিনটি ব্যাংকের ৩৬৭টি পদে নিয়োগের একটি প্যানেল তৈরির কাজ দীর্ঘদিন আটকে থাকার পর আবার কার্যক্রম চালু হয়েছে। 

বিএসসি গঠনের আগে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোতে কর্মকর্তা নিয়োগের ক্ষেত্রে বড় ধরনের আর্থিক লেনদেন হওয়ার অভিযোগ ছিল। এ ধরনের বেশ কিছু লিখিত অভিযোগ তৎকালীন গভর্নর ড. আতিউর রহমানের কাছে উপস্থাপন করা হলে তিনি অর্থ মন্ত্রণালয়কে চিঠি দেন এবং বিলুপ্ত বিআরসির (ব্যাংকার্স রিক্রটমেন্ট কমিটি) আদলে বিএসসি গঠনের উদ্যোগ নেয় অর্থ মন্ত্রণালয়।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিএসসি সচিবালয়ের এক কর্মকর্তা বলেন, বিনা পয়সায় আবেদন করার সুযোগ দেওয়ায় অনেকে ভুয়া আবেদনও করত। কেউ কেউ নিজের ছবির জায়গায় শাহরুখ খানের ছবি দিয়ে আবেদন করেছে। এমন অনেক আবেদন ছাড়াও প্রকৃত আবেদনকারীদের অর্ধেকের মতোই এমসিকিউ পরীক্ষায় উপস্থিত থাকে না।


রাকাবের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কাজী আলমগীর বলেন, ‘আমরা আরও একটু বেশি ফি নেওয়ার পক্ষে মত দিয়েছিলাম। কিন্তু সভার সব সদস্যের পরামর্শক্রমে আপাতত ২০০ টাকা ফি নির্ধারণের একটি সিদ্ধান্ত হয়েছে। তবে এখনও চূড়ান্ত কোনো নির্দেশনা অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে দেওয়া হয়নি।’ 

সূত্র- শেয়ার বিজ

আপনার মন্তব্য লিখুন...