Oops! It appears that you have disabled your Javascript. In order for you to see this page as it is meant to appear, we ask that you please re-enable your Javascript!
ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৩০ মার্চ, ২০২৩  |  Thursday, 30 March 2023  |  এখন সময়:

Advertise@01680 34 27 34

প্রতারণার অভিনব কৌশলে বিস্মিত জেলা প্রশাসক


অনলাইন ডেস্কঃ

প্রকাশিত:   ০১:০৪ এএম, রবিবার, ১৭ এপ্রিল ২০২২   আপডেট:   ০১:০৪ এএম, রবিবার, ১৭ এপ্রিল ২০২২  
প্রতারণার অভিনব কৌশলে বিস্মিত জেলা প্রশাসক
প্রতারণার অভিনব কৌশলে বিস্মিত জেলা প্রশাসক

গোল্ডেন টাচ শিল্পালয়ের ঝাঁপ ফেলে রাত সোয়া আটটার দিকেই বাড়ির পথ ধরেছিলেন রাজীব নাথ। আগেভাগে স্বর্ণের দোকান বন্ধ করা লক্ষ্মীপুরের রেওয়াজ। কিন্তু তাঁকে থামতে হলো নেজারত ডেপুটি কালেক্টরের (এনডিসি) কথায়। ফোনে তিনি বললেন, ডিসি স্যারের ব্যাচমেট এসেছেন। কিছু স্বর্ণালংকার কিনবেন। দোকান খুলতে হবে।

‘ডিসি স্যার’–এর এই কথিত ব্যাচমেটের জন্য রাজীব গত বছরের ২৯ মে দোকান খুলেছিলেন। আর সেই ভুয়া ব্যাচমেট সেই রাতেই তাঁর দোকান থেকে ২ লাখ ৬০ হাজার ২০০ টাকার স্বর্ণালংকার নিয়ে চম্পট দেন। এক বছর ধরে রাজীব নাথ ছাড়াও জেলা প্রশাসক, নেজারত ডেপুটি কালেক্টর ও পুলিশ সবাই মিলে তাঁকে খুঁজছেন। কিন্তু তিনি একরকম হাওয়ায় মিলিয়ে গেছেন।

গোল্ডেন টাচ শিল্পালয়ের ব্যবস্থাপক রাজীব নাথ শনিবার বলেন, প্রতারককে এখনো খুঁজে পাওয়া যায়নি। মামলা চলছে।

সূত্রগুলো বলছে, গত বছর পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন উপসচিবের পরিচয় দিয়ে জেলা প্রশাসক মো. আনোয়ার হোছাইন আকন্দের সঙ্গে কথা বলেন ওই প্রতারক। তিনি বলেন, তিনি জেলা প্রশাসকের ব্যাচমেট, লক্ষ্মীপুরে একটি বিয়ের আমন্ত্রণে স্ত্রীকে নিয়ে এসেছেন। এরপর সার্কিট হাউসে তাঁর থাকার ব্যবস্থা হয়। আর তাঁকে দেখভালের দায়িত্ব দেওয়া হয় এনডিসি মো. শহিদুল ইসলামকে। পরে ঘটে প্রতারণার ওই ঘটনা।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে জেলা প্রশাসক মো. আনোয়ার হোছাইন আকন্দ বলেন, যেভাবে প্রতারণার ঘটনা ঘটেছে, তা অবিশ্বাস্য। প্রতারণার একটা রকম–ধরন আছে। গাড়ি নিয়ে বীরদর্পে এসে এমন কাণ্ড ঘটিয়েছেন।

এ ঘটনায় লক্ষ্মীপুর মডেল থানায় রাজীব নাথ যে মামলা করেন, তাতে তিনি লিখেছেন, রাত সোয়া আটটার দিকে তিনি দোকান বন্ধ করে দিয়েছিলেন। সাড়ে আটটার দিকে এনডিসি মো. শহিদুল ইসলাম তাঁকে দোকান খুলতে বলেন। তিনি জানান, দোকান বন্ধ। এখন মালামাল দেওয়া সম্ভব নয়। এনডিসি তাঁকে আশ্বস্ত করেন, কোনো সমস্যা হবে না। ‘ডিসি স্যারের ব্যাচমেট’ গেলে যেন স্বর্ণালংকার দেওয়া হয়।

কথা শেষ হতে না হতেই গাড়ি নিয়ে দোকানের সামনে পৌঁছান কথিত ‘ব্যাচমেট’। তিনি নিজেকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উপসচিব বলে পরিচয় দেন। রাজীব নাথের কাছ থেকে তিনি ছয়টি সোনার চেইন নেন। এরপর ফোনে এনডিসির সঙ্গে তাঁকে (রাজীব নাথ) কথা বলিয়ে দেন। তাঁর পরামর্শে টাকা নিতে তিনি ওই ভুয়া উপসচিবের গাড়িতে করে সার্কিট হাউসেও যান।

সার্কিট হাউসে পৌঁছে একটি কক্ষে রাজীব দেবনাথকে বসতে দেন ওই প্রতারক। বলেন, পাশের কক্ষ থেকে টাকা আনা পর্যন্ত তিনি যেন চা খান। ২০–২৫ মিনিট পরও তাঁকে আসতে না দেখে রাজীব দেবনাথ ওই কক্ষ থেকে বেরিয়ে নিচে যান। গিয়ে জানতে পারেন, ওই ব্যক্তি সার্কিট হাউস থেকে বেরিয়ে গেছেন।

এ ঘটনায় স্বর্ণের দোকানি রাজীব নাথের বোকামি দেখছেন জেলা প্রশাসক আনোয়ার হোছাইন। তিনি বলেন, ‘বাকিতে কেউ কাউকে স্বর্ণালংকার দেয়? কেউ বললেই তার গাড়িতে উঠে চলে যাবে? অন্য কিছুও তো ঘটতে পারত।’ ওই প্রতারককে খুঁজে বের করতে নানাভাবে চেষ্টা করা হচ্ছে বলে দাবি করেছেন তিনি। এ বিষয়ে বক্তব্যের জন্য এনডিসি শহিদুল ইসলামকে ফোন করে তাঁর সাড়া পাওয়া যায়নি।

এই মামলার তদন্ত করছেন লক্ষ্মীপুর সদর থানার উপপরিদর্শক মো. কাওসারুজ্জামান। তিনি বলেন, মামলা হওয়ার পরপরই তাঁরা মুঠোফোনের সূত্র ধরে প্রতারককে শনাক্তের চেষ্টা করেন। মুঠোফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়। ওই ব্যক্তি সার্কিট হাউসে যেসব তথ্য দিয়েছিলেন, যাচাই–বাছাই করে দেখা যায় তার সবই ছিল ভুয়া। সিসি ক্যামেরার একটা ফুটেজ আছে। ওই ছবি থেকে তাঁকে শনাক্ত করা যায়নি।

অপরাধ থেকে আরও পড়ুন

অপরাধ চট্টগ্রাম বিভাগ প্রতারণা লক্ষ্মীপুর

আপনার মন্তব্য লিখুন...