Oops! It appears that you have disabled your Javascript. In order for you to see this page as it is meant to appear, we ask that you please re-enable your Javascript!
ঢাকা, বুধবার, ২২ মার্চ, ২০২৩  |  Wednesday, 22 March 2023  |  এখন সময়:

Advertise@01680 34 27 34

এসএসসি পরীক্ষায় শঙ্কা কাটিয়ে ভালো ফল, উচ্ছ্বাস শিক্ষার্থীদের


অনলাইন ডেস্কঃ

প্রকাশিত:   ০৮:১২ পিএম, বৃহস্পতিবার, ৩০ ডিসেম্বর ২০২১   আপডেট:   ০৮:১২ পিএম, বৃহস্পতিবার, ৩০ ডিসেম্বর ২০২১  
এসএসসি পরীক্ষায়  শঙ্কা কাটিয়ে ভালো ফল, উচ্ছ্বাস শিক্ষার্থীদের
এসএসসি পরীক্ষায় শঙ্কা কাটিয়ে ভালো ফল, উচ্ছ্বাস শিক্ষার্থীদের

পরীক্ষার ফলে এগিয়ে মেয়েরা। পাসে শীর্ষে ময়মনসিংহ, পিছিয়ে বরিশাল। জিপিএ-৫–এ এগিয়ে ঢাকা শিক্ষা বোর্ড। করোনার প্রাদুর্ভাবের কারণে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে টানা ছুটি ছিল। ফলে ঘরবন্দী জীবনে ভয় ও শঙ্কা নিয়েই শিক্ষার্থীদের কাটাতে হয়েছে দীর্ঘ সময়। এসএসসি পরীক্ষা হবে কি হবে না, সেই দুশ্চিন্তায় পেয়ে বসেছিলে তাদের। একটা সময় সিদ্ধান্ত হয় সংক্ষিপ্ত পাঠ্যসূচিতে শুধু তিনটি বিষয়ে পরীক্ষা হবে, তা–ও সময় ও নম্বর কমিয়ে। ভয় ও শঙ্কা নিয়ে দেড় মাস আগে পরীক্ষায় বসে লাখো শিক্ষার্থী, যা দেড় বছরের মধ্যে প্রথম পাবলিক পরীক্ষা।

গতকাল বৃহস্পতিবার মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি) পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশের পর সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলেছেন, গত ২০ বছরের মধ্যে এত ভালো ফল তাঁরা দেখেননি। পাসের হার ও ফলের সর্বোচ্চ সূচক জিপিএ-৫-উভয় সূচকই এবার অনেক বেশি ঊর্ধ্বমুখী। এর মধ্যে মেয়েদের ফল হয়েছে তাক লাগানো। পাসের হার ও জিপিএ-৫ উভয় সূচকেই তারা ছেলেদের পেছনে পেলে এগিয়ে গেছে।

করোনার সংক্রমণের বাস্তবতায় এবার মাত্র তিনটি বিষয়ে সংক্ষিপ্ত পাঠ্যসূচিতে কম নম্বরে ও কম সময়ে পরীক্ষা হয়েছে। বাকি বিষয়ের মূল্যায়ন হয়েছে জেএসসি ও জেডিসির বিভিন্ন বিষয়ের নম্বরের ভিত্তিতে।

আগে সাধারণত এসএসসি এবং এইচএসসির মতো পাবলিক পরীক্ষায় পাস-ফেলের বড় নিয়ামক হিসেবে দেখা হতো ‘তুলনামূলক কঠিন’ বলে পরিচিত ইংরেজি এবং গণিতকে। কিন্তু এবার বাধ্যতামূলক এসব বিষয় এবং চতুর্থ বিষয়ে কোনো পরীক্ষা হয়নি। একজন শিক্ষার্থী যে গ্রুপ অর্থাৎ কেউ বিজ্ঞানের হলে শুধু সেই বিভাগের তিনটি নৈর্বাচনিক বিষয়ে পরীক্ষা দিয়েছে। একইভাবে মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগের শিক্ষার্থীরা তাদের বিভাগের তিন বিষয়ে পরীক্ষা দিয়েছে। পরীক্ষাও হয়েছে অর্ধেক নম্বরে।

শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও শিক্ষা বোর্ডের কর্মকর্তারা বলছেন, মূলত বিশেষ ব্যবস্থায় পরীক্ষা এবং মূল্যায়নের কারণেই ফল এত ভালো হয়েছে। ‘অটোপাসের’ চেয়ে এই প্রক্রিয়া তুলনামূলক ভালো। তবে তাতে যে ঘাটতি থেকে যাচ্ছে, তা পূরণের জন্য এখনই মহাপরিকল্পনা করে তা বাস্তবায়নের ব্যবস্থা করার পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।

এর আগে এ বছরের শুরুতে পরীক্ষা ছাড়াই এইচএসসি পরীক্ষার ফল প্রকাশিত হয়েছিল। যাতে সব শিক্ষার্থীই পাস করেছিল। তখন জেএসসি ও এসএসসির গড় ফলের ভিত্তিতে এই মূল্যায়ন করা হয়েছিল।

পাসের হার ৯৪ শতাংশের বেশি

৯টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ডের অধীন শুধু এসএসসি পরীক্ষায় এবার গড় পাসের হার ৯৪ দশমিক শূন্য ৮ শতাংশ। এই তথ্য বলছে, মাত্র ৬ শতাংশ শিক্ষার্থী উত্তীর্ণ হতে পারেনি। পাসের হার বেড়েছে গতবারের চেয়ে ১০ শতাংশের বেশি। মোট জিপিএ-৫ পেয়েছে ১ লাখ ৬৩ হাজার ৮৪০ জন। পাঁচ বছরের ফলাফলের তথ্য পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, এই সময়ের মধ্যে এবারই সবচেয়ে বেশি জিপিএ-৫ পেয়েছে। গত বছর এই সংখ্যা ছিল প্রায় সোয়া লাখ।

করোনার সংক্রমণ পরিস্থিতির কারণে মুঠোফোনে খুদে বার্তা (এসএমএস) বা ওয়েবসাইটের মাধ্যমে ফলাফল জানার সুযোগ ছিল। তবু অনেক শিক্ষার্থী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে গিয়েও ফল সংগ্রহ করে আনন্দে মেতেছে।

সাধারণত এসএসসি পরীক্ষা হয়ে থাকে প্রতিবছরের ফেব্রুয়ারিতে। ২০২০ সালের পরীক্ষাও নির্ধারিত সময়ে হয়েছিল। কিন্তু এর পরপরই করোনার সংক্রমণের কারণে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছুটি ঘোষণা করা হয়। ফলে পরীক্ষাগুলোও আটকে যায়। এ জন্য নির্ধারিত সময়ের সাড়ে আট মাস পর গত নভেম্বর শুধু গ্রুপভিত্তিক (বিজ্ঞান, মানবিক, ব্যবসায় শিক্ষা ইত্যাদি) তিনটি বিষয়ে এই পরীক্ষা হয়।

রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে গতকাল ফলাফল প্রকাশ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবন থেকে ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হয়ে এই ফল প্রকাশ করেন। এরপর শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি ফলাফলের তথ্য তুলে ধরেন।

এবার ৯টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ডের অধীন মোট পরীক্ষার্থী ছিল ১৭ লাখ ৯২ হাজার ৩১২ জন। এর মধ্যে উত্তীর্ণ হয়েছে ১৬ লাখ ৮৬ হাজার ২১১ জন। অবশ্য মাদ্রাসা ও কারিগরি বোর্ড মিলিয়ে পাস করা পরীক্ষার্থী আরও বেশি। তাতে জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থীও বেশি (১ লাখ ৮৩ হাজার ৩৪০ জন)।

এগিয়ে মেয়েরা

ফলাফলের তুলনামূলক পর্যালোচনায় দেখা গেছে, এবার এসএসসি পরীক্ষায় মেয়েদের পাসের হার প্রায় ৯৫ শতাংশ। আর ছেলেদের পাসের হার ৯৩ শতাংশের সামান্য বেশি। অন্যদিকে মোট জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থীদের মধ্যে ছাত্রী ৯২ হাজার ৯১৫ জন এবং ছাত্র ৭০ হাজার ৯২৫ জন।

এসএসসি, দাখিল ও এসএসসি ভকেশনাল মিলিয়েও এবার মেয়েরা ভালো এগিয়ে রয়েছে।

এ বিষয়ে সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা রাশেদা কে চৌধূরী বলেন, পরীক্ষায় মেয়েদের ভালো করার বিষয়টি কয়েক বছর ধরেই দেখা যাচ্ছে। তবে এবার আরেকটি ভিন্ন কারণ আছে। বাস্তবতা হলো, করোনার সময় ছেলেদের চেয়ে মেয়েরা কিন্তু পরিবারের নাগালের মধ্যে বেশি ছিল। বলা যেতে পারে ঘরে থেকে তারা বেশি পড়াশোনা করেছে। এটা গ্রামেগঞ্জেও দেখা গেছে। এর প্রভাবে আগের ধারাটির সঙ্গে আরেকটু বেশি যোগ হয়েছে।

পাসে শীর্ষে ময়মনসিংহ, পিছিয়ে বরিশাল

৯টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ডে পাসের হারে শীর্ষে অবস্থানে আছে ময়মনসিংহ শিক্ষা বোর্ড। এই বোর্ডে গড় পাসের হার ৯৭ দশমিক ৫২। অন্যদিকে পাসের হার কম বরিশাল শিক্ষা বোর্ড, ৯০ দশমিক ১০ শতাংশ। অবশ্য ফলের সর্বোচ্চ জিপিএর দিক থেকে বরাবরের মতো এবারও শীর্ষে আছে ঢাকা শিক্ষা বোর্ড। এই বোর্ডে জিপিএ–৫ পেয়েছে ৪৯ হাজার ৫৩০ জন।

১৮ প্রতিষ্ঠান থেকে সবাই ফেল

এবার সারা দেশের ১৮টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কোনো পরীক্ষার্থীই পাস করতে পারেনি। আর ৫ হাজার ৪৯৪টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে সবাই পাস করেছে। যেসব প্রতিষ্ঠান থেকে কেউ পাস করেনি, সেগুলোর কারণ খুঁজে বের করতে হবে বলে জানান শিক্ষামন্ত্রী। দেশের বাইরে নয়টি কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত এসএসসি পরীক্ষায় ৪১৬ জন পরীক্ষার্থী অংশ নিয়ে পাস করেছে ৩৯৮ জন।

ভিন্ন রকমের পরীক্ষা ও ফলাফলের সার্বিকভাবে মূল্যায়ন করতে গিয়ে মূল্যায়ন বিশেষজ্ঞ এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক এস এম হাফিজুর রহমান বলেন, বিশেষ ব্যবস্থায় অনুষ্ঠিত পরীক্ষার ফলাফল এমন হওয়াটাই প্রত্যাশিত ছিল। কিন্তু এসএসসিতে যেহেতু সব বিষয়ের পরীক্ষা হয়নি বা মূল্যায়ন হয়নি, ফলে স্বভাবতই সেগুলো শিক্ষার্থীরা পড়েনি বা পড়লেও জোর ছিল না। এতে একটি ঘাটতি থাকবে। ফলে উচ্চমাধ্যমিকে গিয়ে যোগসূত্র তৈরি করতে বেশ ঝামেলা হতে পারে। তাই ঘাটতি পূরণের জন্য এখনই পরিকল্পনা করে তা বাস্তবায়নের ব্যবস্থা করতে হবে।

শিক্ষা থেকে আরও পড়ুন

শিক্ষা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এসএসসি পরীক্ষার ফলাফল এসএসসির ফল

আপনার মন্তব্য লিখুন...