আজ কিংবদন্তি সংগীত পরিচালক সত্য সাহার প্রয়াণ দিবস
অনলাইন ডেস্কঃ
প্রকাশিত: ০৬:০১ এএম, শুক্রবার, ২৭ জানুয়ারী ২০১৭
সময় কতো দ্রুত যায়! দেখতে দেখতে ১৮টি বছর পার হয়ে গেল এদেশের সংগীতের বিস্ময় প্রতিভা, কিংবদন্তি সত্য সাহা প্রয়াণের। ১৯৯৯ সালের ২৭ জানুয়ারি আর না ফেরার দেশে পাড়ি দিয়েছিলেন তিনি। এবারে পালিত হচ্ছে এই গুণীর ১৮তম মৃত্যুবার্ষিকী।
পালিত হচ্ছে বলতে তেমন আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু অবশ্য নয়। পরিবারের মানুষদের কাছে ঘরোয়া আয়োজনেই স্মরণীয় হচ্ছেন তিনি। হয়তো কিছু পূজা-অর্চণা হবে। কিন্তু গুণীর কদর করতে বরাবরই উদাসীন আমাদের শিল্প-সংস্কৃতি অঙ্গন, বিশেষ করে সত্য সাহার কাজের বিচরণ ক্ষেত্র চলচ্চিত্রাঙ্গনে এখন অবধি তেমন কোনো আয়োজনের খবর পাওয়া যায়নি।
বালাইষাট! গুণীরা কারো অপেক্ষায় থাকেন না প্রশংসিত হবেন বলে। তারা কাজ করে যান শিল্প সৃষ্টির উন্মাদনায়। সেই কাজই তাকে বাঁচিয়ে রাখে আজীবন, সকল অন্তরে। তাই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে অনেক তারকা গানের মানুষেরাই আজ শ্রদ্ধাবনত হৃদয়ে স্মরণ করছেন তাদের প্রিয় গুরুপ্রতিম সত্য সাহাকে। নিশ্চয় স্মরণ করছেন তার অসংখ্য অনুরাগীরা।
আর ঢাকাই ছবির মিষ্টি মেয়ে খ্যাত কিংবদন্তি অভিনেত্রী কবরীর অন্তরে সত্য সাহা চিরকালই রইবেন পূজনীয় হয়ে। সত্য বাবুর হাত ধরেই আজকের কবরী হয়ে উঠা তার। সুভাষ দত্তের ‘সুতারাং’ ছবি দিয়ে রুপালি পর্দায় যাত্রা শুরু করা কবরীকে আবিষ্কার করেছিলেন সত্য সাহাই।
সত্য সাহার জন্ম ১৯৩৪ সালের ২৫ ডিসেম্বর উত্তর চট্টগ্রামের হাটহাজারী উপজেলাধীন নন্দীরহাটে। সেখানকার প্রভাবশালী জমিদার বংশে জন্মেছিলেন তিনি। ছোট বেলা থেকেই গানের আবহ পেয়েছিলেন পরিবার ও চারপাশে। বাংলায় যে সেই সময়টা তখন সংগীতের সোনালী যুগ।
গানের পাখি সত্য সাহা ১৯৪৬-১৯৪৮ এর মাঝামাঝি সময়ে নারায়ণগঞ্জ রামকৃষ্ণ স্কুল থেকে এন্ট্রান্স পাশ করেন এবং ১৯৫১ ও ১৯৫২ সালে ভারতের কলকাতা বিদ্যাসাগর কলেজ থেকে বিএ পাশ করেন।
তার গান নিয়ে জানাশোনা কিংবা সমৃদ্ধ হবার ইতিহাস খুব একটা জোরালোভাবে খুঁজে পাওয়া যায় না। তবে তার অমর সৃষ্টির দিকে তাকালে সহজেই অনুমেয় হয় তিনি সংগীতকে হৃদয়ে ধারণ করেছিলেন প্রেয়সীর মতোই। তবে গানের মানুষ হিসেবে সত্য সাহা বিকশিত হন চলচ্চিত্রে। ১৯৫৫ সালে সুভাষ দত্তের ‘সুতরাং’ থেকে তার সংগীত পরিচালক হিসেবে যাত্রা শুরু। তারপর অসংখ্য কাজ তিনি করেছেন।
সেগুলোর মধ্যে প্রজন্মের পর প্রজন্ম হারিয়েও আবেদন হারায়নি ‘নীল আকাশের নিচে আমি’, ‘চেনা চেনা লাগে তবু অচেনা’, ‘দুঃখ আমার বাসর রাতের পালঙ্ক’, ‘চিঠি দিও প্রতিদিন’, ‘আমার মন বলে তুমি আসবে’, ‘বন্ধু হতে চেয়ে তোমার’, ‘আকাশের হাতে আছে একরাশ নীল’, ‘তুমি কি দেখেছো কভু’, ‘ঐ দূর দূরান্তে’, ‘তোমারই পরশে জীবন আমার’, ‘মাগো মা ওগো মা’- ইত্যাদি গানগুলো। বরং নতুন প্রজন্মের শিল্পী-সংগীত পরিচালকেরা এই গানগুলো নিয়ে আজও কাজ করছেন, রিমেক করছেন। এখানেই তো সত্য সাহা কালজয়ী। তার গানেরা কোনোদিন তাকে ভুলতে দেবে না। সত্য সাহার আত্মার শান্তি কামনায় তার মৃত্যু দিনে জানাই গভীর শ্রদ্ধাঞ্জলি।