ঢাকা, সোমবার ১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩২, ০৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৭ | এখন সময়:

Advertise@01680 34 27 34

গরমে ঠোঁট ফাটার কারণ ও প্রতিকার


অনলাইন ডেস্কঃ

প্রকাশিত:   ০৫:০৪ পিএম, মঙ্গলবার, ১১ এপ্রিল ২০২৩   আপডেট:   ০৫:০৪ পিএম, মঙ্গলবার, ১১ এপ্রিল ২০২৩  
গরমে ঠোঁট ফাটার কারণ ও প্রতিকার
গরমে ঠোঁট ফাটার কারণ ও প্রতিকার

শীতকালের মতো ঠোঁট ফেটে যাচ্ছে। দিনের ঠা ঠা রোদে মিনিট দশেক থাকলেই গরমে শরীর যেন পুড়ে যাচ্ছে। এ ধরনের তাপমাত্রায় বেশিক্ষণ থাকলে যেখানে ঘাম ঝরার কথা, এবার তা হচ্ছে না। চিকিৎসক ও আবহাওয়াবিদেরা এবারের চৈত্রের এই ব্যতিক্রম গরম অনুভূতির জন্য বাতাসে আর্দ্রতা কম থাকাকে মূল কারণ বলছেন। এ ধরনের তাপমাত্রায় গরম বেশি থাকবে, এটাই স্বাভাবিক বলে মনে করছেন আবহাওয়াবিদেরা। তবে তাপমাত্রার তুলনায় গরম বেশি অনুভূত হচ্ছে। বাতাসে আর্দ্রতা কম থাকলে সাধারণত বাতাস শুষ্ক হয়ে ওঠে। সেই সঙ্গে তাপমাত্রা বেশি থাকলে শরীর থেকে তা পানি শুষে নেয়। ফলে শরীরে জ্বালাপোড়া করে ও ঠোঁট শুকিয়ে যায়।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের চর্ম রোগ বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম ভূইয়াও একই কথা বলেছেন। তিনি বলেন, বাতাসে আর্দ্রতা কমে যাওয়ার কারণে শুধু ঠোঁট ফাটা নয়, শরীরের চামড়াও শুকিয়ে যাচ্ছে। 

যে কারণে গরমে ঠোঁট ফাটছে:

ঢাকার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসক প্রফেসর মোস্তফা জামান বলছেন, আবহাওয়া বা জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে আগের মতো শীতকাল এখন আর হয় না এবং একই সাথে ঋতুগুলোর বৈশিষ্ট্যেও পরিবর্তন আসার প্রভাব পড়ছে মানবশরীরেও।

তিনি বলেন, এখন রোজার সময় আবার গরমও অনেক পড়ছে, যে কারণে অনেকেই পানিশুন্যতায় ভুগছেন। গরমের কারণেই কারও ঠোঁট ফাটছে, আবার কারও কোষ্ঠকাঠিন্য হচ্ছে। কারণ চামড়া শুষ্ক হয়ে যাচ্ছে দ্রুত। তিনি জানান, "শুষ্কতার কারণে স্কীনের জলীয় অংশ দ্রুত কমে যাচ্ছে। ঠোঁট বেশি আক্রান্ত হচ্ছে, কারণ ঠোটের বাইরের দিকটার চামড়া থাকে খুবই পাতলা ধরণের।" তিনি আরও বলেন, "যারা রোজা পালন করেন, তাদের এটা বেশি হতে পারে। কারণ সেহেরি থেকে ইফতার পর্যন্ত প্রায় ১৪ ঘণ্টা পানাহার থেকে বিরত থাকতে হয় এই গরমে।"

"তবে এটা কোন বড় সমস্যা নয়। তাপমাত্রার স্বাভাবিক প্রভাব। সচেতন থাকলেই এটি এড়ানো সম্ভব"।

সাধারণত যেসব কারণে ঠোঁট ফাটে:

শরীরের চামড়ার তুলনায় ঠোঁট বেশি ফাটে, কারণ এটি মূলত চামড়ার উপরিভাগের খুব পাতলা স্তর। তাই শীতকালে বাতাসে আর্দ্রতার পরিমাণ বেশি হলে শরীর থেকে জলীয় অংশ কমে যায় এবং তখন চামড়ার এই স্তরটি দ্রুত ক্ষতিগ্রস্ত অর্থাৎ শুকিয়ে ফেটে যায়। 

"ঠোঁটের এই স্তরটিকে এপিডারমিস বা বহিঃস্তর বলে। এটি পাতলা হওয়ায় তাপমাত্রার হেরফেরে বা বাতাস আদ্র হলে দ্রুত প্রভাব পড়ে এর ওপর," এমনটাই জানান প্রফেসর মোস্তফা জামান। তিনি বলেন, "আবার ঠোঁট সামান্য শুষ্ক হলে অনেকে জিহ্বা দিয়ে ভেজানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু পরে স্যালাইভা শুকিয়ে গেলে ঠোট আরও শুষ্ক হয়ে ওঠে ও ফেটে যেতে পারে।"

তিনি বলছেন, অনেক সময় উচ্চ রক্তচাপ, হার্ট, কিডনি বা ক্যান্সারের চিকিৎসায় ব্যবহৃত কিছু ঔষধও শরীর থেকে পানি বের করে নেয় এবং সে কারণেও অনেকের ত্বক বিশেষ করে ঠোঁটে প্রভাব পড়ে। আবার অনেক সময় ঠোঁটের অবস্থান নাকের ঠিক নিচে থাকার জন্য নিঃশ্বাসের সাথে বেরিয়ে আসা গরম বাতাসের প্রভাবেও ঠোঁট শুষ্ক হয়ে ওঠে।

ঠোঁট ফাটার সমাধান:

চিকিৎসকরা ঠোঁট ফাটা থেকে রক্ষা পেতে কিছু পরামর্শ দিয়ে থাকেন। এগুলো হলো:

•প্রচুর পানি পান করা

•ঠোঁটের যত্ন নেয়া

•তীব্র সূর্যালোক ও ধুলোবালি এড়ানো

•সুষম ও পুষ্টিকর খাবার খাওয়া

•প্রয়োজনে ভ্যাসলিন ব্যবহার করা (তবে রাসায়নিক মিশ্রিত কোন কিছু ব্যবহার থেকে সাবধান থাকার পরামর্শ দিয়ে থাকেন চিকিৎসকরা)

জীবন-যাপন থেকে আরও পড়ুন

নারী স্বাস্থ্য পরিবেশ গরম আবহাওয়া তাপমাত্রা ত্বকের যত্ন জীবন-যাপন

আপনার মন্তব্য লিখুন...