Oops! It appears that you have disabled your Javascript. In order for you to see this page as it is meant to appear, we ask that you please re-enable your Javascript!
ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৩০ মার্চ, ২০২৩  |  Thursday, 30 March 2023  |  এখন সময়:

Advertise@01680 34 27 34

অস্কার নিয়ে যত বিতর্ক: পোশাক, প্রতিবাদ, ভুল, পুরস্কার, চড় কিংবা প্রত্যাখ্যান


অনলাইন ডেস্কঃ

প্রকাশিত:   ১০:০৩ পিএম, রবিবার, ১২ মার্চ ২০২৩   আপডেট:   ১০:০৩ পিএম, রবিবার, ১২ মার্চ ২০২৩  
অস্কার নিয়ে যত বিতর্ক: পোশাক, প্রতিবাদ, ভুল, পুরস্কার, চড় কিংবা প্রত্যাখ্যান
অস্কার নিয়ে যত বিতর্ক: পোশাক, প্রতিবাদ, ভুল, পুরস্কার, চড় কিংবা প্রত্যাখ্যান

বিশ্ব চলচ্চিত্রের সবচেয়ে জমকালো আসর হচ্ছে অস্কার। একাডেমি অ্যাওয়ার্ডসের এবারের আসর ৯৫তম। সিনেমাপ্রেমীরা এই দিনের অপেক্ষায় থাকেন সর্বদা। আবার এই আসর নিয়ে আলোচনা বা সমালোচনাও কম হয় না। নানা ধরনের বিতর্ক জুড়ে আছে অস্কার অনুষ্ঠান নিয়ে। কোন ঘটনাটি বেশি বিতর্কিত, এই প্রশ্ন করলে আগে নানা অভিমত পাওয়া যেত। তবে গত বছরের আসরে (৯৪ তম অস্কার) যা ঘটেছিল, তার পর থেকে অবশ্য ভিন্ন ভিন্ন অভিমত আসার সুযোগ নেই। ভরা আসরে উপস্থাপককে চড় মারাই অস্কারের ইতিহাসের সবচেয়ে বড় বিতর্কিত ঘটনা।

উইল স্মিথের চড়কাণ্ড

গত আসরের ঘটনা। মঞ্চে তখন ছিলেন জনপ্রিয় কমেডিয়ান ক্রিস রক। মঞ্চে দাঁড়িয়ে উইল স্মিথের স্ত্রী জাডা পিংকেট স্মিথকে নিয়ে ঠাট্টা করেন ক্রিস। সবাই কমবেশি হেসে দিলেও গম্ভীর হয়ে যান জাডা। এরপরই ঘটনাটি ঘটে সবার চোখের সামনে। মঞ্চে এসে ক্রিস রককে সপাটে চড় কষান উইল স্মিথ।

উইল স্মিথের স্ত্রী অ্যালোপেশিয়া নামের একটি রোগে আক্রান্ত। এই রোগ হলে মাথার চুল পড়ে যায়। এ নিয়েই রসিকতা করেছিলেন ক্রিস রক। জাডা পিংকেট স্মিথের দিকে তাকিয়ে ক্রিস বলেন, ‘জাডা, “জিআই জেন টু”-এর জন্য তর সইছে না।’ ‘জিআই জেন’ ১৯৯৭ সালের ছবি, যেখানে কেন্দ্রীয় চরিত্রের অভিনয়শিল্পী ডেমি মুরের ছিল ন্যাড়া মাথার জর্ডান ও’নিলের চরিত্র।

পরে অবশ্য ম্মিথকে মঞ্চে উঠতে হয়েছিল বড় এক উপলক্ষের কারণেই। আর সেটি হলো সেরা অভিনেতার অস্কার নেওয়া। ‘কিং রিচার্ড’ ছবিতে রিচার্ড উইলিয়ামস চরিত্রে অভিনয়ের জন্য ৯৪তম অস্কারে সেরা অভিনেতার পুরস্কার জিতেছেন উইল স্মিথ। তবে সবকিছুকেই ছাপিয়ে গিয়েছিল এই চড়কাণ্ড। এ ঘটনায় উইল স্মিথকে ১০ বছরের জন্য নিষিদ্ধ করেছে অস্কার কর্তৃপক্ষ। ফলে এবারের আসরে তাঁকে আর দেখা যাবে না। আর চরকাণ্ডের পর কর্তৃপক্ষও এবার অনেক সতর্ক। পুরস্কার অনুষ্ঠানে থাকবে বিশেষ ব্যবস্থা। এ জন্য গঠন করা হয়েছে একটি ‘ক্রাইসিস টিম’, যারা যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় কাজ করবে।

একাডেমি অব মোশন পিকচার্স আর্ট অ্যান্ড সায়েন্সের (এএমপিএএস) প্রতিষ্ঠা ১৯২৭ সালে। সিনেমাশিল্পে শ্রম অসন্তোষ ঠেকাতেই মূলত এর প্রতিষ্ঠা হয়। সিনেমা কোম্পানি মেট্রো গোল্ডেন-মায়ারের অন্যতম প্রতিষ্ঠা লুইস বি মায়ার এর অন্যতম উদ্যোক্তা। মূলত ইউনিয়নের হস্তক্ষেপের বাইরে এসে শ্রমিক সমস্যা সমাধান করতে অভিনেতা, পরিচালক, লেখক, কলাকুশলী ও প্রযোজকদের জোট এটি। প্রতিষ্ঠার পর তাঁরা চিন্তাভাবনা শুরু করেছিলেন একটা পুরস্কারের ব্যবস্থা করার। ১৯২৯ সাল থেকে সেই শুরু একাডেমি অ্যাওয়ার্ড।

সেরা প্রত্যাখ্যান

১৯৩৬ সালের কথা। ‘দ্য ইনফরমার’ সিনেমা থেকে অস্কার পেয়েছিলেন এর চিত্রনাট্যকার ডাডল নিকোলাস। তবে সেই অস্কার নিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছিলেন। কারণ, তখন লেখকদের সংস্থা রাইটার্স গিল্ড ধর্মঘট ডেকেছিল। একজন লেখক হিসেবে ডাডলি নিকোলাস সেই ধর্মঘটের প্রতি সংহতি জানিয়ে অস্কার গ্রহণ করেননি। এটাই ছিল অস্কার নিতে প্রথম অস্বীকৃতির ঘটনা।

এরপরের ঘটনা ১৯৭১ সালের। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে মার্কিন জেনারেল জর্জ এস প্যাটনের জীবনী নিয়ে সিনেমা ‘প্যাটন’ সেরা ছবির অস্কার পেয়েছিল। ‘প্যাটন’-এর ভূমিকায় অভিনয় করা জর্জ সি স্কট পেয়েছিলেন সেরা অভিনেতার অস্কার। কিন্তু তিনি তা গ্রহণ করেননি। শুরু থেকেই তিনি বলে আসছিলেন যে এভাবে সেরা বেছে নেওয়াকে তিনি সমর্থন করেন না। তিনি বলতেন, সৃষ্টিশীল কাজের ক্ষেত্রে একজনের সঙ্গে আরেকজনের কাজের তুলনা করা ঠিক নয়। ফলে তিনি আগেই জানিয়ে দিয়েছিলেন, অস্কারে তিনি যাবেন না। এরপরও তাঁকে মনোনয়ন দেওয়া হয় এবং সেরা অভিনেতার নামও ঘোষণা হয়। কিন্তু জর্জ স্কট তাঁর অবস্থান থেকে সরে আসেননি।

তবে অভিনব প্রতিবাদের জন্য অস্কারের ইতিহাসে জায়গা করে নিয়েছেন মার্লোন ব্র্যান্ডো। ১৯৭৩ সালে তিনি ‘দ্য গডফাদার’-এর জন্য সেরা অভিনেতা হয়েছিলেন। কিন্তু সেবার পুরস্কার নিতে চাননি। এর পরিবর্তে তাঁর হয়ে পাঠিয়েছিলেন আদিবাসী অভিনেত্রী ও অ্যাকটিভিস্ট সাচিন লিটলেফেদারকে। তিনি জানালেন, চলচ্চিত্রে আদিবাসী আমেরিকানদের যথাযথ মর্যাদা না দেওয়ার প্রতিবাদে মার্লোন পুরস্কার নিচ্ছেন না।

পুরস্কার নিয়ে যত বিতর্ক

১৯৪২ সালে সেরা ছবির অস্কার পায় ‘হাউ গ্রিন ওয়াজ মাই ভ্যালি’। ওই বছরই মুক্তি পেয়েছিল অরসন ওয়েলসের ‘সিটিজেন কেইন’। চলচ্চিত্রপ্রেমী ও বোদ্ধাদের কাছে এখনো বিশ্বের সেরা সিনেমা ‘সিটিজেন কেন’। সেবার ৯টি মনোনয়ন পেলেও জুটেছিল মাত্র একটা অস্কার, সেরা চিত্রনাট্যের। ‘হাউ গ্রিন ওয়াজ মাই ভ্যালি’ ভালো সিনেমা। কিন্তু ‘সিটিজেন কেন’কে হারিয়ে জেতার মতো নয়। ফলে এর জন্য অস্কারের পুরস্কার কমিটিকে এখনো সমালোচনা শুনতে হয়।

অস্কারের মঞ্চকে রাজনীতির মঞ্চ বানানো বারণ। কিন্তু বন্ধ তা বলা যাবে না। কেউ কেউ রাজনীতি-সংশ্লিষ্ট কথা বলেছেন এবং এতে একধরনের সাজাও পেয়েছেন। যেমন ১৯৯৩ সালে ভিন্ন ভিন্ন বিষয় নিয়ে অনুষ্ঠানে কথা বলেছিলেন রিচার্ড গেরে, সুশান সারানডন ও টিম রবিনস। এর মধ্যে রিচার্ড গেরে তিব্বতে চীনের সামরিক অভিযানের নিন্দা করেছিলেন, আর এইচআইভিতে আক্রান্ত হাইতিবাসীর প্রতি করা অন্যায় আচরণের সমালোচনা করেছিলেন বাকি দুজন।

২০০৬ সালে সেরা সিনেমার পুরস্কার পায় ‘ক্র্যাশ’। পুরস্কার নিতে এসে এর পরিচালক পল হাগিস নিজেও বলেছিলেন যে তিনি মনে করেন না এ পুরস্কার পাওয়ার যোগ্য সিনেমা ‘ক্র্যাশ’। সেবার প্রতিযোগিতায় ছিল অং লির ‘ব্রোকব্যাক মাউন্টেন’। এ সিনেমার সঙ্গে ‘ক্র্যাশ’-এর আসলে কোনো তুলনাই হয় না। তারপরও কেন ‘ক্র্যাশ’ সেরার পুরস্কার পেল, এ এক বিস্ময়।

পুরস্কার নিয়ে বিস্ময় আরও আছে। ‘ফরেস্ট গ্যাম্প’ অনেক বিখ্যাত সিনেমা। ১৯৯৫ সালের সেরা পুরস্কার পাওয়া এ ছবি নিয়েও আছে বিতর্ক। মনোনয়নের তালিকায় আরও ছিল টরেনটিনোর ‘পাল্প ফিকশন’ ও ‘দ্য শওশঙ্ক রিডেমশন’। ‘শওশঙ্ক রিডেমশন’ আইএমডিবি পাঠকদের ভোটে এখনো সেরা সিনেমা, আর ‘পাল্প ফিকশন’ তো সিনেমার ভাষাই পাল্টে দিয়েছে। এ দুই সিনেমা বাদ দিয়ে ‘ফরেস্ট গাম্প’-এর সেরা হওয়া এখনো অনেকের জন্যই বিস্ময়কর ঘটনা।

একই ধরনের সমালোচনা আছে ২০১০ সালের ‘দ্য কিং স্পিচ’ সিনেমা নিয়েও। অনেকেই মনে করেন, ফেসবুক নিয়ে বানানো ‘দ্য সোশ্যাল নেটওয়ার্ক’ বা ক্রিস্টোফার নোলানের ‘ইনসেপশন’ পেলেই সঠিক হতো। আরেকটি প্রবল সমালোচনা আছে ১৯৯৮ সালের সিনেমা ‘শেক্‌সপিয়ার ইন লাভ’ নিয়ে। খুবই সাধারণ এ সিনেমা নিয়ে সিনেমাপ্রেমীদের অনেক ক্ষোভ। অথচ সেবার ছিল স্পিলবার্গের ‘সেভিং প্রাইভেট রায়ান’-এর মতো সিনেমা।

আবার ১৯৯০ সালের সেরা সিনেমার অস্কার যায় ‘ড্রাইভিং মি ডেইজ’-এর ঘরে। অথচ সেবার ছিল ‘ডেড পয়েট সোসাইটি’, ‘মাই লেফট ফুট’-এর মতো সিনেমা। আর সেবার ‘স্পাইক লির ডু দ্য রাইট থিং’ তো মনোনয়নই পায়নি। সমালোচকেরা ড্রাইভিং মিস ডেইজির সেরা ছবির সঙ্গে তুলনা করে ২০১৯ সালে সেরা ছবির অস্কার পাওয়া গ্রিন বুকের সঙ্গে, যা একদমই পছন্দ হয়নি।

১৯৭৮ সালে সেরা ছবি হয়েছিল উডি অ্যালেনের ‘এনি হল’। অথচ এখন সমালোচকেরা মনে করেন, ‘স্টার ওয়ার্স’ পেতে পারত।

পোশাক নিয়ে যত বিতর্ক

১৯৮৬ সালের অস্কারে ‘মুনস্ট্রাক’ সিনেমার জন্য সেরা অভিনেত্রী হয়েছিলেন গায়িকা শের। তবে তিনি বিখ্যাত হয়ে আছেন পুরস্কার নিতে আসা অনুষ্ঠানে পরা পোশাকের কারণে। পাখির পালকের ছড়াছড়ি ছিল পুরো পোশাকে, যাতে শরীর ঢাকা পড়েছিল কমই। শের অবশ্য বলেছিলেন, এই পোশাক তাঁর একধরনের প্রতিবাদ। বলা হয়, আগের বছর মাস্ক সিনেমায় সেরা কাজ করেও শের মনোনয়নই পাননি। তারই প্রতিবাদ তিনি করেছিলেন পোশাক দিয়ে।

অভিনেত্রী এডি উইলিয়ামসের নাম খুব কমই জানেন সবাই। তারপরও তিনি বিখ্যাত হয়ে আছেন পোশাকের জন্যই। ১৯৮৬ সালের অস্কার পুরস্কার অনুষ্ঠানে তিনিই ছিলেন সবচেয়ে সংক্ষিপ্ত বসনা। তবে সবাইকে ছাড়িয়ে গেছেন পুরুষ ফটোগ্রাফার ও শিল্পী রবার্ট ওপেল। ১৯৭৪ সালের অনুষ্ঠানে তিনি সম্পূর্ণ নগ্ন হয়ে অস্কার মঞ্চে উঠেছিলেন। তখন উপস্থাপনা করছিলেন ডেভিড নিভেন।

নিকৃষ্ট অস্কার নিয়ে যত কথা

১৯৮৯ সালের অস্কারের খ্যাতির তুলনায় কুখ্যাতিই বেশি। সম্ভবত সবচেয়ে নিকৃষ্ট অস্কার অনুষ্ঠানে এটিই। বিপত্তি শুরু প্রথম পারফরম্যান্স থেকেই। ১১ মিনিটের একটা উপস্থাপনা ছিল হলিউডের সিনেমাজগৎ নিয়ে। গায়ক রব লুয়ির সঙ্গে ছিলেন স্নো হোয়াইট রুপি অভিনেত্রী এলিন বোওম্যান। সেই গান আর উপস্থাপনা থেকে সবাই এতটাই বিরক্ত হয়েছিলেন যে এর প্রযোজক এলান কারের ক্যারিয়ারই বলতে গেলে শেষ হয়ে গিয়েছিল। অথচ তিনি ছিলেন ‘গ্রিজ’-এর মতো ছবির প্রযোজক। অনুষ্ঠান শেষে জুলি অ্যান্ড্রুজ, পল নিউম্যান, সিডলি লুমেত ও গ্রেগরি পেকের মতো তারকারা লিখিতভাবে অভিযোগ দিয়েছিলেন। বলেছিলেন, কর্তৃপক্ষকে বলতে হবে যে এ ধরনের পারফরম্যান্স ভবিষ্যতে আর হবে না। এমনকি চরম বিরক্ত গ্রেগরি পেক তাঁর পুরস্কারও ফিরিয়ে দিতে চেয়েছিলেন।

অস্কারে যত প্রতিবাদ

২০০৩ সালে ‘বোলিং ফর কলোমবাইন’ প্রামাণ্যচিত্রের জন্য অস্কার পান মাইকেল মুর। পুরস্কার গ্রহণ করে তিনি প্রতিক্রিয়ায় বললেন, ‘আমরা এমন এক সময়ে বাস করছি, যখন আমাদের জীবনে এমন একজন ব্যক্তি আছেন, যিনি কাল্পনিক কারণ দেখিয়ে আমাদের যুদ্ধে পাঠাচ্ছেন…আপনার জন্য লজ্জা, মি. বুশ, আপনার জন্য লজ্জা।’ বুশের ইরাক যুদ্ধের কঠোর সমালোচনা করে এই বক্তৃতা দিয়েছিলেন, যা আজও মানুষ মনে করে।

অস্কারের মঞ্চকে রাজনীতির মঞ্চ বানানো বারণ। কিন্তু বন্ধ তা বলা যাবে না। কেউ কেউ রাজনীতি-সংশ্লিষ্ট কথা বলেছেন এবং এতে একধরনের সাজাও পেয়েছেন। যেমন ১৯৯৩ সালে ভিন্ন ভিন্ন বিষয় নিয়ে অনুষ্ঠানে কথা বলেছিলেন রিচার্ড গেরে, সুশান সারানডন ও টিম রবিনস। এর মধ্যে রিচার্ড গেরে তিব্বতে চীনের সামরিক অভিযানের নিন্দা করেছিলেন, আর এইচআইভিতে আক্রান্ত হাইতিবাসীর প্রতি করা অন্যায় আচরণের সমালোচনা করেছিলেন বাকি দুজন। সেই বছরের অস্কার প্রযোজক এ ঘটনায় এতটাই খেপে গিয়েছিলেন যে ওই তিনজনকে আর অস্কার অনুষ্ঠানে ডাকা হবে না বলে ঘোষণা দিয়েছিলেন। যদিও এর তিন বছর পর সুশান সারানডন সেরা অভিনেত্রীর অস্কার পান ও ২০০৪ সালে টিম রবিনস পান সেরা সহ-অভিনেতার অস্কার। কিন্তু রিচার্ড গেরে অবশ্য আর অস্কারের মঞ্চে ফিরতে পারেননি।

ভুল নিয়ে যে বিতর্ক

২০১৭ সালেই ঘটেছিল অস্কার পুরস্কারের সবচেয়ে বড় ভুল। মঞ্চে ছিলেন ফায়ে ডানাওয়ে আর ওয়ারেন বেটি। খাম খুলে ঘোষণা দিলেন সেরা সিনেমার নাম, ‘লা লা ল্যান্ড’। খানিক পরই বোঝা গেল, এটা ভুল। নতুন করে ঘোষণা এল, সেরা ছবি আসলে ‘মুনলাইট’।

অস্কার যখন কেবল সাদাদের

হেতি ম্যাকডানিয়েল গন উইথ দ্য উইন্ড থেকে সেরা অভিনেত্রীর পুরস্কার পেয়েছিলেন ১৯৪০ সালে। তিনিই ছিলেন প্রথম অস্কার পাওয়া কালো রঙের মানুষ। তবে এত উল্লসিত হওয়ার মতো কিছু ছিল না। অনুষ্ঠানটি হয়েছিল লাসভেগাসের অ্যাম্বাসেডর হোটেলে। হেতি ম্যাকডানিয়েলকে আলাদা একটা রুমে বসানো হয়েছিল আর বাকি সবাই বসেছিলেন একসঙ্গে। তাঁর শেষ ইচ্ছা ছিল, মৃত্যুর পর যেন তাঁকে হলিউড সিমেনটারিতে সমাহিত করা হয়। কিন্তু সেই অনুমতিও দেওয়া হয়নি।

সেই পরিস্থিতির খানিকটা বদল হয় ২০১৬ সালে। একটা হ্যাশট্যাগ আন্দোলন পরিস্থিতি পাল্টে দিয়েছিল। এর আগের বছর অস্কারে ছিল কেবল সাদাদের ছড়াছড়ি। একজন কালো রঙের মানুষকেও মূল চার ক্যাটাগরিতে মনোনয়ন পর্যন্ত দেওয়া হয়নি। পরের বছর একই ঘটনা ঘটলে হ্যাশট্যাগঅস্কারসোহোয়াইট আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে।

এমন না যে এর আগে কালো কেউ অস্কার পাননি। যেমন সিডনি পটিয়ার পেয়েছিলেন ১৯৬৯ সালে, ২০০১ সাল তো আরও ব্যতিক্রম ছিল। ডেনজেল ওয়াশিংটন ও হেলি ব্যারি পেয়েছিলেন সেরা অভিনেতা ও অভিনেত্রীর অস্কার। জেমি ফক্স সেরা অভিনেতা হয়েছিলেন ২০০৪ সালে আর ফরেস্ট হুইটেকার ২০০৬ সালে। তাতেও অস্কারের সাদাপ্রীতি মুছে যায়নি।

তবে অস্কার কর্তৃপক্ষ সেই আন্দোলনের পর থেকে আগের অবস্থান থেকে অনেকটা সরে এসেছে। পাশাপাশি একই সমালোচনা ছিল এশিয়ানদের পক্ষ থেকে। এখন এশিয়ানরাও জায়গা করে নিচ্ছেন অস্কারে।

নাম নিয়ে যত কথা

একাডেমি অব মোশন পিকচার্স আর্ট অ্যান্ড সায়েন্সেস ১৯২৯ সাল থেকে প্রতিবছর দিয়ে আসছে একাডেমি অ্যাওয়ার্ড। এ পর্যন্ত ঠিকই আছে। তাহলে এ পুরস্কারের নাম অস্কার কী করে হলো?

পুরস্কারের যে মূর্তিটি দেওয়া হয়, সেটির নকশা করেছিলেন সিনেমা কোম্পানি এমজিএমের শিল্পপরিচালক কেট্রিক গিবসন আর তৈরি করে দিয়েছিলেন ভাস্কর্য জর্জ স্ট্যানলি। ১৯৩০ সাল থেকেই এ ট্রফিকে বলা শুরু হলো অস্কার। এ নামকরণ নিয়ে তিনটি ভাষ্য আছে। যেমন একাডেমিতে মার্গারেট হেরিক নামে একজন গ্রন্থাগারকর্মী ছিলেন। তিনি মনে করতেন, মূর্তিটি তাঁর চাচার মতোই দেখতে। আর সেই চাচার নাম ছিল অস্কার। মার্গারেট তাই শুরু থেকেই অস্কার ডাকা শুরু করেন। আরেকটি ভাষ্য বলছে, নামটি দিয়েছিলেন সেরা অভিনেত্রীর পুরস্কার পাওয়া বেটি ডেভিস। তাঁর সাবেক স্বামীর নাম ছিল হারমান অস্কার নেলসন। মূর্তিটির পেছন দিকটা নাকি হারমান অস্কারের মতোই ছিল। আবার অনেকে লিখেছেন, আসলে প্রখ্যাত আইরিশ নাট্যকার অস্কার ওয়াইল্ডের নাম ধরেই পুরস্কারটির এ নামকরণ। তবে যা-ই হোক না কেন, ১৯৩৯ সাল থেকে একাডেমি কর্তৃপক্ষও একে অস্কার পুরস্কার বলা শুরু করে।

বিনোদন থেকে আরও পড়ুন

হলিউড চলচ্চিত্র পরিচালক চলচ্চিত্র প্রযোজক উইল স্মিথ ক্রিস রক অভিনয় অস্কার ২০২৩

আপনার মন্তব্য লিখুন...